মোটরবাইকের মধ্যে ছিল প্রায় চার ফুটের গোখরো। —নিজস্ব চিত্র।
গভীর রাতে মোটরবাইক চালু করতেই ফোঁস ফোঁস শব্দটা শুনেছিলেন। ভেবেছিলেন, বাইকে যান্ত্রিক গোলযোগ। নিচু হয়ে খুঁটিয়ে দেখতে গিয়েই আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড়। বাইকের তেল ভরার ট্যাঙ্কের নীচে ফণা তুলেছে প্রমাণ সাইজের একটি গোখরো! তা দেখে হিমেল রাতেও ঘেমেনেয়ে একসা ধূপগুড়ির ব্যবসায়ী বাপি ঘোষ। জনবহুল এলাকায় বাইক ফেলে সেখান থেকে পড়িমরি ছুট লাগিয়েছিলেন তিনি। খবর পেয়ে ওই বিষধরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের এক সদস্য। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন বাপি!
শুক্রবার রাতে বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন বলে মনে করছেন পেশায় ব্যবসায়ী ধূপগুড়ির ওই যুবক। তিনি জানিয়েছেন, গভীর রাতে বাইক চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। গুলজারচক মোড়ের মতো জনবহুল রাস্তার পাশে মিনিট কয়েকের জন্য বাইক থামিয়ে রেখে কাজে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে বাইক চালু করতেই তা থেকে ফোঁস ফোঁস শব্দ কানে আসে। প্রথমে ভেবেছিলেন, হয়তো যান্ত্রিক কারণে বাইকের কোথা থেকে এমন শব্দ হচ্ছে। তবে এক্সেলেটরে মোচ়ড় দিতেই ফের একই শব্দ! কোথা থেকে শব্দ আসছে? তা দেখতেই আলোআঁধারির মধ্যে বাইকটি খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করেন। দেখেন, বাইকের তেলের ট্যাঙ্কের নীচের দিকে জড়়িয়ে রয়েছে আস্ত গোখরো। সেখানে থেকেই ফণা তুলছে বিষধরটি। কোনও রকমে বাইকে ফেলেই দে ছুট দে ছুট! বাপির কথায়, ‘‘বাইকে ওই গোখরো সাপটিকে দেখে ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে বাইক ফেলে দৌড় লাগাই। এর পর আমার চেনাজানা এক পরিবেশকর্মীকে ফোন করি। তিনিই এসে সাপটিকে উদ্ধার করে বস্তায় পুরে নিয়ে যান।’’
বিষধরকে উদ্ধারে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন পরিবেশপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ডুয়ার্স নেচার অ্যান্ড স্নেক লাভার্স অর্গানাইজেশন’-এর সদস্যরা। তবে উদ্ধারকারী দল এলেও বাইকের তেলের ট্যাঙ্কের নীচে সাপটি এমন ভাবে জড়িয়েছিল যে সেটিকে উদ্ধার করা বেশ কঠিন হয়ে প়ড়ে। শেষমেশ সিট থেকে শুরু করে বাইকের বেশ ক’টি যন্ত্রাংশ খুলে দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় গোখরোটিকে উদ্ধার করা হয়। দেখা যায়, ওই গোখরোটি প্রায় চার ফুটের। সেটিকে বস্তাবন্দি করে সেখান থেকে নিয়ে যান ওই সংগঠনের সদস্যরা। বাপি বলেন, ‘‘গোখরোটিকে দেখে খুব আতঙ্কে ছিলাম। চোখে না পড়লে বড় কোনও বিপত্তি হতে পারত।’’