ধূপগুড়ির হিমঘরের কর্মী অমিতকুমার ঠাকুর। —নিজস্ব চিত্র।
১০ লক্ষ টাকা চুরির অভিযোগে এক কর্মীকে থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশ দিয়ে মারধর করানোর অভিযোগ উঠল। ধূপগুড়ির একটি হিমঘর মালিকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন ওই কর্মীর পরিবার। তাদের দাবি, মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য এ অভিযোগ গ্রহণ করে শিলিগুড়ি থানা। আহত কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে এ ঘটনায় এলাকাবাসী ও শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। সরব হয়েছে তৃণমূল-সহ বাম দলগুলি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ধূপগুড়ির সাঁকোয়াঝোড়ায় হরিমন্দির কোল্ড স্টোরেজের ওই কর্মীর নাম অমিতকুমার ঠাকুর। তিনি বানারহাট ব্লকের গয়েরকাটা সমাজপাড়ায় থাকেন।
পরিবারের দাবি, দু’দিন আগে অমিতকে নিয়ে শিলিগুড়িতে গিয়েছিলেন হিমঘরের ক্যাশিয়ার। তবে কেন তাঁকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা জানানো হয়নি। বলা হয়েছিল, তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছেন মালিক। শিলিগুড়ি পৌঁছনোর পর অমিতকে বলা হয়, ক্যাশিয়ারের ব্যাগ থেকে ১০ লক্ষ টাকা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
খবর পেয়ে কলকাতা থেকে ধূপগুড়ি ছুটে আসেন হিমঘরের মালিক বজরং অগ্রবাল। এর পর অমিতকে সঙ্গে নিয়ে শিলিগুড়ি খালপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে যান তিনি। অভিযোগ, সেখানে পুলিশের সঙ্গে আলাপ জমানোর পর অমিতকে ফাঁড়ির ভিতরেই একটি খুঁটিতে বেঁধে চলে বেধড়ক মারধর। পু্লিশকর্মীদের সঙ্গে মিলে বজরংও মারধর করেন বলে অভিযোগ। ওই ফাঁড়ির ওসি পাপ্পু সিংহ এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে আনন্দবাজার অনলাইনে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ক্লোজ করা হয় শিলিগুড়ি খালপাড়া ফাঁড়ির ওসি পাপ্পু সিংহকে। তাঁকে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পরিবারের দাবি, পুলিশি নির্যাতনের পর অমিতকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে মারধরের জেরে তাঁর সারা শরীরে কালসিটে পড়ে গিয়েছে। তাঁকে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এই ঘটনায় সরব হয়েছেন স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে এই ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। পুলিশকর্মীরা ওই শ্রমিককে বিনা কারণে যে ভাবে মারধর করেছেন, তাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। হিমঘর মালিক ও অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি।’’ ওই কর্মীর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন ধূপগুড়ির সিপিএম নেতা জয়ন্ত মজুমদার। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন ওই ফাঁড়ির কর্মীরা।
অমিতের পরিবারের দাবি, ধূপগুড়ি এবং বানারহাট থানা-সহ বিন্নাগুরি পুলিশ ফাঁড়ি ফিরিয়ে দেয় তাদের। অবশেষে শিলিগুড়ি থানা অভিযোগ গ্রহণ করে।