কেনাকাটা: ধনতেরসের দিনে কেনাকাটা করতে শিলিগুড়ির একটি সোনার দোকানে উপচে পড়েছে ভিড়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
দুর্গাপুজোয় ভাল ব্যবসা হয়নি। দীপাবলি আর ধনতেরাসের হাত ধরে কি ব্যবসায় জোয়ার আসবে। এই প্রশ্নই ক’দিন ধরে ভাবিয়ে রেখেছিল গয়না ব্যবসায়ীদের। শুক্রবার বিকেল থেকে দোকানে-দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখে শেষ পর্যন্ত হাসি ফুটল বিক্রেতাদের মুখে। এ দিন বিকেলের পর থেকেই শহরের একাধিক সোনার দোকানে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে ভিড়। বিক্রেতাদের একাংশের দাবি, সন্ধে সাড়ে সাতটার মধ্যে কোনও দোকানে পাঁচশো কোথাও হাজার জন কেনাকাটা সেরেছেন।
ধনতেরসে হাসমিচক লাগোয়া হিলকার্ট রোড, সেবক রোডের দুই মাইলে, বিধান মার্কেটের সোনার দোকানগুলোয় এমনই পরিস্থিতি। শিলিগুড়ির রামকৃষ্ণ রোডের একটি সোনার দোকানে ভিড় সামলাতে খদ্দেরদের অনেককে বাইরে ক্যাম্প করে বসানো হচ্ছে। ভিতর থেকে কিছু খদ্দের কেনাকেটা সেরে বেরলে বাইরে অপেক্ষায় থাকা ক্রেতাদের কয়েকজনকে ভিতরে যেতে বলা হচ্ছে।
প্রথা অনুযায়ী ধনতেরসের দিনে সমৃদ্ধির আশায় সোনা-রুপোর জিনিস কেনেন অনেকে। ব্যবসার আশায় সেদিকেই তাকিয়ে ছিল দোকানগুলো। এ দিন কেউ বিকেল চারটে থেকে কেনাকাটা শুরু করেছেন। কেউ আবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে শুরু করেছেন কেনাকাটা। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটাতেও অনেক দোকানে ক্রেতাদের লম্বা লাইন দেখে উৎফুল্ল ব্যবসায়ীরা। বিধান মার্কেটের একটি গয়নার দোকানের ব্যবসায়ী পার্থ কর্মকার বলেন, ‘‘রাত আটটায় পর্যন্ত অন্তত ৭০০ জন কেনাকাটা করেছেন। কয়েক লক্ষ টাকার
জিনিস কেনাকাটা করেছেন ক্রেতারা।’’ ক্রেতাদের ভিড়ে কথা বলার ফুরসত নেই কারও। দুই মাইলের একটি সোনার দোকানের ম্যানেজার
সৌমিত্র ওঝা বলেন, ‘‘রাত আটটা পর্যন্ত দেড় হাজার খদ্দের কেনাকাটা করেছেন।’’ তাদের দোকানে ওই সময় পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে।
বঙ্গীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির তপন বণিক বলেন, ‘‘আমাদের সমিতির অধীনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০০ দোকান রয়েছে। শিলিগুড়িতে সব মিলিয়ে আটশো সোনার দোকান হবে। কয়েকশো কোটি টাকার বেশি কারবার হয়েছে।’’
স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সম্পাদক কুন্দন বর্মণের, দাবি একশো কোটির বেশি তো হবেই। সবমিলিয়ে এ দিনের বিক্রিতে হাসি ফুটেছে গয়নার দোকানের মালিক, কর্মীদের মুখে।
ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, শিলিগুড়িতে ধনতেরসের কেনাকাটা গত বেশ কয়েক বছর ধরেই একটা বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। গয়নার ব্যবসায়ীরাও তাই মুখিয়ে থাকেন এই দিনটির অপেক্ষায়। বড় দোকানগুলোর সামনে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করা হয়। নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখতে চাননি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট কর্তৃপক্ষ। সাদা পোশাকের পুলিশে মুড়ে ফেলা হয়েছিল শহর। বিপুল সংখ্যায় মহিলারা এ দিন কেনাকাটা করতে আসেন গয়নার দোকানগুলোতে। সেই কারণে প্রচুর পরিমাণে মহিলা পুলিশও মোতায়েন রাখা হয় বিভিন্ন জায়গায়।