বেপরোয়াঃ পথ দূর্ঘটনায় শিব ভক্তদের মৃত্যুর পরও, বাগডোগরা-শিলিগুড়ি পথে বেপরোয়া সন্যাসী গাড়ি। ছবিঃ স্বরূপ সরকার
কয়েকদিন থেকে পরিকল্পনা চলছিল কোনও মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার। খরচ এবং পরিশ্রমের কথা ভেবে দূরে কোথাও না গিয়ে বাড়ি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়ির বাগডোগরা জঙ্গলে জংলীবাবা শিবমন্দিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মন্দিরে সকালে পৌঁছালে ভিড় কম থাকে এবং বাড়িতে দিনের মধ্যেই ফিরতে পারব। সে জন্য সোমবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম।
এলাকার দাদা কাকু মিলে ৮ জন হাঁটা পথে যাত্রা শুরু করি। মোটামুটি ৫ কিলোমিটার যেতেই এই ঘটনা। আমরা তখন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের মুনি চা বাগানে কাছে। আমি বিপ্লব রায়ের (আর এক জখম) সঙ্গে কয়েক গজ এগিয়ে হাঁটছিলাম। প্রধান সড়কে যাতে দুর্ঘটনায় না পড়ি সে জন্য রাস্তার একেবারে ধার দিয়ে সারি করে হাঁটছিলাম আমরা। কিন্তু একটি গাড়ি (স্করপিও) পেছন থেকে গিয়ে বিকট শব্দে সাজোরে ধাক্কা মারার শব্দ শুনি। পেছন ফিরে তাকাতেই যেন সব শেষ। গাড়িটি কয়েক জনকে পিষে দিয়ে রাস্তার ধারে পড়ে যায়। জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পরে দেখি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। শুধু একুটু বলতে পারি, গাড়ির ধাক্কায় কেউ যেন উড়ে গিয়ে আমার গায়ে পড়ল। আমার মাথায়, পায়ে, হাতে চোট লেগেছে। বিপ্লবের জ্ঞান ফিরেনি। আমরা দু’জন বাদে বাকিদের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের কথা ভাবলেই কাঁন্না পাচ্ছে। তাঁরা বড়, সে জন্য আমাদের সাবধানে হাঁটার পরামর্শ দিচ্ছিলেন।
আমি একাদশ শ্রেণির রানিডাঙা কালারাম স্কুলের ছাত্র। বিপ্লব এবার দশম শ্রেণি। পড়াশোনার প্রস্তুতি চলছে দু’জনের। বাড়িতে মা, বাবা আমাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখছেন। জীবনের শুরুতেই নতুন করে যেন প্রাণ ফিরে পেলাম।