—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্যের নির্দেশিকা এখনও এসে পৌঁছয়নি জেলায়। তার আগেই আলু কেনার সরকারি দর বাড়ানোর দাবিতে সরব হলেন কোচবিহারের আলু চাষিরা। কৃষকদের একটি অংশের দাবি, সবে উঠতে শুরু করেছে আলু। শুরু হয়ে গিয়েছে ফড়েদের দাপট। তাঁদের অভিযোগ, আলু যখন বেশি পরিমাণে উঠতে শুরু করবে, তখন ফড়েদের হাতেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া, প্ৰত্যেক বছরই হিমঘরে আলু রাখার ‘বন্ড’ পেতে কৃষকদের হয়রানির মুখে পড়তে হয়। সরকারি ভাবে আলু কেনার দর ভাল থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না। এই অবস্থায় আলুর দাম কেজি প্ৰতি ১৩ টাকা করার দাবি তুলেছেন কৃষকেরা।
কৃষি বিপণন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা জেলায় পৌঁছয়নি। নির্দেশ পেলে, আলু কেনা শুরু হবে বলেও জানানো হয়েছে। কোচবিহার জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) গোপাল মান বলেন, ‘‘এ বার আলুর উৎপাদন ভাল হবে বলেই আশা করছি। হিমঘরের সংখ্যাও জেলায় বেড়েছে। তাতে বন্ড নিয়ে এ বার কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় এ বার ৩৫ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এ বার অনুকূল আবহাওয়া ছিল। কোথাও রোগ ছড়ানোর খবর নেই। সে জন্য এ বার জেলায় আলুর উৎপাদন ভাল হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানান, এক বিঘা জমিতে একশো মণ বা তার কিছু বেশি আলু উৎপাদন হতে পারে। সে হিসাবে জেলায় যা হিমঘর রয়েছে, তাতে মোট উৎপাদনের পঞ্চাশ শতাংশের কিছু বেশি আলু হিমঘরে রাখা যেতে পারে। বর্তমানে কোচবিহার জেলায় কুড়িটি হিমঘর রয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। সে ক্ষেত্রে বাকি আলু নিয়ে চিন্তা থেকেই যায়।
এ ছাড়া, হিমঘরের বন্ডের কালোবাজারি আটকাতে প্রশাসনের আগাম তৎপরতার দাবিও উঠেছে। কৃষকদের দাবি, হিমঘরের বন্ডের কালোবাজারি হয়। ফড়েরা আগে থেকেই ওই বন্ড নিজেদের হাতে নিয়ে রাখে। কৃষকেরা বন্ড না পেয়ে, অল্প দামে ফড়েদের কাছে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হন। তাতে লাভের অঙ্ক চলে যায় ফড়েদের পকেটে।
কৃষকসভার কোচবিহার জেলার যুগ্ম সম্পাদক আকিক হাসান বলেন, ‘‘আলু চাষের লাভের অঙ্ক বাইরে চলে যায়। কৃষকেরা প্রত্যেক বার তেমন লাভ করতে পারেন না। সে কারণে আমরা দাবি করছি, যাতে সরকার ১৩ টাকা কেজি দরে আলু কেনে। তা হলে কৃষকেরা লাভবান হবেন।’’
তৃণমূলের কৃষক সংগঠনের কোচবিহার জেলার সহ সভাপতি অমল রায় বলেছেন, ‘‘এখন অল্প আলু উঠছে। তাতে বাজার দর ভাল। পুরোপুরি আলু তুলতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তখন ছবি স্পষ্ট হবে। সরকার প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেবে বলেই আশা করছি।’’