কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন ডেপুটি সিএমওএইচ (ওয়ান) বিশ্বজিৎ রায়। নিজস্ব চিত্র
অসুস্থ হয়ে ভর্তি হওয়ার পরে তিন দিন কেটে গেলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। শুক্রবার কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমে ভর্তি হলেন জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা। তিনি কোচবিহারের ডেপুটি সিএমওএইচ (ওয়ান) বিশ্বজিৎ রায়। পরীক্ষার পরে জানা গিয়েছে, তিনি ডেঙ্গি আক্রান্ত। তিনি প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা হিসাবে জেলায় পরিচিত। নিজে হাতে লালারস সংগ্রহ থেকে শুরু করে করোনা নিয়ে নানা কাজে তাঁকে দেখা গিয়েছে বার বার। এমন এক স্বাস্থ্যকর্তা কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলায় শোরগোল পড়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন। কোচবিহারের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার দেবব্রত সাহা বলেন, “তিনি কেন এমন অভিযোগ তুলেছেন বলতে পারছি না। তবে তাঁর চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিষেবায় কোনও ঘাটতি ছিল না।”
ডেপুটি সিএমওএইচ অভিযোগ করেন, গত ১ সেপ্টেম্বর শারীরিক ভাবে অসুস্থ বোধ করায় তিনি কোচবিহার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে প্রথমদিন থেকে তাঁর চিকিৎসা নিয়ে টালবাহানা চলছিল। কোন চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসা করবেন, তা ঠিক করতে পারছিলেন না মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তিন দিন তিনি সেখানে ভর্তি ছিলেন। একেকদিন একেকজন চিকিৎসক তাঁকে দেখেছেন। বার বার বলার পরেও তাঁর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়নি। পরে তিনি নিজেই পরীক্ষার বিষয়ে উদ্যোগী হন। প্লেটলেট পরীক্ষা করেন তিনি। তাতে দেখা যায় প্লেটলেট ৬২ হাজার থেকে কমে ৩৯ হাজারে পৌঁছে গিয়েছে। সেই সঙ্গেই তিনি করোনা, ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করানো হয়। তাতে তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়ে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন এমএসভিপি। এর পরেই তিনি হাসপাতাল থেকে অন্যত্র ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান।
মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছে, ডেপুটি সিএমওএইচকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। হাসপাতালে কোনও কার্ডিওলজি বিভাগ নেই। তার পরেও কার্ডিওলজিস্ট দিয়ে তাঁর পরীক্ষা করানো হয়েছে। পরে প্লেটলেট পরীক্ষা করা হয় হাসপাতাল থেকেই। তা অনেকটা কম ছিল। পরে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। হাসপাতালের এক আধিকারিক দাবি করেন, ডেপুটি সিএমওএইচকে দেখার জন্য প্রতিদিন অনেক লোক ভিড় করেন। তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মানছিলেন না। তা নিয়েই জানানো হয়। কিন্তু কোনও খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ডেপুটি সিএমওএইচের বদলি হয়েছে। চলতি মাসের চার্জ বুঝিয়ে দিয়ে কলকাতায় তাঁর যোগ দেওয়ার কথা।