ডেঙ্গি ঠেকাতে শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, বলে ফের অভিযোগ তুললেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শিলিগুড়ি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের দেখতে যান তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেন।
পর্যটন মন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘শিলিগুড়ি পুর এলাকায় ডেঙ্গি রোধে ওয়ার্ডগুলিতে যথাযথ ভাবে সাফাই, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, মশা মারার তেল স্প্রে করা, ফগিং করার কাজ হচ্ছে না।’’ তাঁর নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতর থেকে পুরসভাকে বৃহস্পতিবার পাঁচ হাজার কেজি ব্লিচিং দেওয়া হয়েছে। নিয়ম মাফিক তার সঙ্গে ৪৫ হাজার কেজি চুন মিশিয়ে পুরসভার ৪৭ টি ওয়ার্ডে সাফাইয়ের কাজের জন্য বিলি করার কথা তা ঠিক মতো হচ্ছে না। নির্মীয়মাণ বাড়িগুলিতে কৌটা, ফেলে রাখা পাত্রে জল জমে থাকছে কি না তা নজরদারির কাজ হচ্ছে না বলে পর্যটনমন্ত্রীর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘মেয়র এই পরিস্থিতিতেও কলকাতায় বসে রয়েছেন। বিধানসভার অধিবেশনে থাকছেন। তারপর তাঁর দলের বৈঠক রয়েছে। অথচ পুর পরিষেবার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’’
শিলিগুড়ি হাসপাতালে ডেঙ্গি সন্দেহে ৫ জন ভর্তি রয়েছেন। তাঁর মধ্যে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পদমপ্রসাদ শর্মাকে মন্ত্রীর উদ্যোগেই শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ দিন তিনি হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রয়েছেন। জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও পাঁচ জন। স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী পুর এলাকায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১২৫ জন। তবে নার্সিংহোমগুলিতে প্রচুর বাসিন্দা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, পুর কমিশনার, চেয়ারম্যানকে ডেকে সরাসরি বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাফাই, ব্লিচিং ছড়ানোর কাজের নির্দেশ দিচ্ছেন পর্যটনমন্ত্রী। পুরসভা স্বশাসিত হওয়ায় মন্ত্রী এ ভাবে নির্দেশ দিতে পারেন না বলে মত মেয়রের। মেয়র বলেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কিছু করতে চাইলে তিনি আমাকে সে কথা বলতে পারতেন। পুর এলাকায় কিছু করতে হলে পুর কর্তৃপক্ষই সেই সিদ্ধান্ত নেবে। অথচ, তা না করে তিনি সরাসরি পুর কমিশনার, সচিবকে নির্দেশ দিচ্ছেন। রাজ্যে সেনাদের কাজ নিয়ে মুখ্য মন্ত্রী যেমন অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যকে না জানিয়ে করা হচ্ছে এটাও তো তেমনই।’’
ওয়ার্ডগুলিতে সাফাই, ফগিং সমস্ত কিছুই পুরসভার তরফে করা হচ্ছে বলে মেয়রের দাবি। মেয়রের কথায়, ‘‘বিধানসভার অধিবেশনে কলকাতায় রয়েছেন। অন্য কোনও বিষয় নেই। পুরসভার কাজকর্ম তিনি নিয়মিত দেখেন, খোঁজ রাখেন। ছুটির দিনেও অফিসে গিয়ে কাজ করেন।’’ পুরসভার মাধ্যমেই সাফাই কাজের জন্য ব্লিচিং দেওয়ার কথা স্বাস্থ্য দফতরকে পর্যটন মন্ত্রী বলেছেন বলে দাবি করেছেন। পুরসভা যদি সেই ব্লিচিং না নিতে চায় তা হলে তিনি ব্যবস্থা করবেন।