কখনও বৃষ্টি, আবার কখনও চড়া রোদ। গত এক সপ্তাহ ধরে আবহওয়ার এমনই খামখেয়ালিপনায় বিপর্যস্ত উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ও ইসলামপুরের প্রার্থীরা পুর নির্বাচনের দিন ভোটারদের স্বার্থে দুই পুরসভার সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অস্থায়ী ছাউনি তৈরির দাবিতে একযোগে সরব হয়েছেন।
আগামী ২৫ এপ্রিল পুর নির্বাচনের দিন আচমকা প্রতিকূল আবহওয়া সৃষ্টি হলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্যই এ বার একযোগে উঠেপড়ে লেগেছে কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি ও তৃণমূল। সম্প্রতি রায়গঞ্জ ও ইসলামপুরের প্রশাসনের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের তরফে দুই মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিক তথা মহকুমাশাসকদের কাছে এই দাবি জানানো হয়েছে।
রায়গঞ্জের মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিক তথা মহকুমাশাসক বিপুলকুমার বিশ্বাস জানান, কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন বুথ পরিদর্শনের কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজন অনুযায়ী কালিয়াগঞ্জ পুর এলাকার বিভিন্ন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে প্রশাসনের তরফে ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
ইসলামপুরের মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিক তথা মহকুমাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে ইসলামপুর পুর এলাকার সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ছাউনি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে কালিয়াগঞ্জ ও ইসলামপুরের একাধিক ডেকরেটর সংস্থাকে পুর এলাকার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ছাউনি তৈরির কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই দুই পুরসভায় ১৭টি করে মোট ৩৪টি ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। দু’টি পুর এলাকায় ৪২টি করে মোট ৮৪টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। বেশির ভাগ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বারান্দা না থাকায় ও কয়েকটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সঙ্কীর্ণ বারান্দা থাকার কারণে ভোটারদের খোলা আকাশের নিচে লাইন দিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ভোট দিতে হয়।
কালিয়াগঞ্জ পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী অরুণ দে সরকার ও ইসলামপুর পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী কানাইয়ালাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘সর্বদলীয় বৈঠকে দলের তরফে পুর এলাকার সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অস্থায়ী ছাউনির ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়েছে।’’
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নির্বাচনের দিন আচমকা প্রতিকূল আবহওয়ার আশঙ্কা করে ভোটারদের সুবিধার্থে বিজেপির তরফে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রশাসনের কাছে দুই পুরসভার সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করার দাবি জানিয়েছি।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালও একই কথা জানান। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, দুই পুর এলাকার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ছাউনি তৈরি-সহ পানীয় জল, শৌচাগার ও প্রয়োজনে প্রাথমিক চিকিত্সার ব্যবস্থা রাখার দাবিও জানানো হয়েছে।