প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে প্রসব বেদনা শুরু হওয়ায় এক প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। বাধ্য হয়ে টোটোতে চাপিয়ে ওই প্রসূতিকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেয় পরিবার। কিন্তু পথেই চলন্ত টোটোতে পুত্র সন্তান প্রসব করেন ওই প্রসূতি। এরপর হাসপাতালে পৌঁছনোর কিছুক্ষণ পর ওই সদ্যোজাতকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকরা। স্থানীয় সূত্রে খবর ওই প্রসূতির নাম মর্জিনা খাতুন। বাড়ি রায়গঞ্জ থানার কমলাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম কর্ণজোড়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ঘটনা। শুক্রবার হাসপাতালের মর্গে ওই সদ্যোজাতের ময়নাতদন্ত করিয়েছে পুলিশ। প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবেই সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। এ দিন ময়নাতদন্তের পর মর্জিনার পরিবার পুলিশকে মৌখিকভাবে সেই অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
উত্তর দিনাজপুরের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ১ অনুপ হাজরা এ দিন বলেন, “যে কোনও প্রসূতি কিংবা পরিবার টোল ফ্রি ১০২ নম্বরে ফোন করলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঙ্গে সঙ্গে জননী ও শিশু সুরক্ষা যোজনায় সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা পাওয়ার কথা। ওই প্রসূতি বা পরিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত অভিযোগ জানালে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মর্জিনার স্বামী কুদ্দুস আলি রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। কুদ্দুসের দাবি, ওইদিন দুপুরে মর্জিনার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। তিনি বলেন, “যন্ত্রণা শুরু হতে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চেয়ে স্বাস্থ্য দফতরে ফোন করি। আমার স্ত্রীকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা এক আশাকর্মী নম্বর দিয়েছিলেন। কিন্তু ফোনে আমাকে জানানো হয়, সেই সময় অ্যাম্বুল্যান্স নেই। অ্যাম্বুল্যান্স পেতে দেরি হবে। এরপরেই আমার মা ও দুই বৌদি স্ত্রীকে টোটোতে চাপিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে হাসপাতালের উদ্দশ্যে রওনা হয়।" তিনি আরও বলেন, "কিন্তু হাসপাতালের দেড় কিলোমিটার আগে রায়গঞ্জের বকুলতলা মোড়ের কাছে স্ত্রী চলন্ত টোটোতেই সন্তান প্রসব করে ফেলে। এরপর হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে চিকিৎসকেরা আমার ছেলেকে মৃত বলে জানান।" তাঁর অভিযোগ, "ঠিক সময়ে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পেলে স্ত্রীকে নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো যেত। টোটোতে প্রসবের জন্য ছেলেটা মারা যেত না।”