সমবেত: আলোচনায় পশ্চিম শালবাড়ির বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কিডনি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল প্রায় একমাস আগে৷ তারপর বিভিন্ন মহলে দায়ের হয়েছিল অভিযোগও৷ কিন্তু অভিযোগ, সেই অভিযোগের তদন্ত নিয়ে চলছে চরম ঢিলেমি৷ আর যার জেরে কোচবিহারের প্রশাসনের বিরুদ্ধে এ বার এককাট্টা হয়ে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারের একটি গ্রাম৷ তাই নয়, ওই গ্রামের তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে কোচবিহার জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন৷
১৮ জুলাই কোচবিহার শহরের তেঁতুলতলা এলাকার একটি নার্সিংহোমের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তার একটি কিডনি কেটে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে সেখানকার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের সকরেন আলিপুরদুয়ারের পশ্চিম শালবাড়ির বাসিন্দা সুরেন রায়৷ অভিযোগ এরপর প্রায় একমাস কেটে যেতে চললেও তার অভিযোগের তদন্ত এতটুকুও এগোচ্ছেনা অভিযোগের সত্যতা নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা কারনো নিয়েও কোচবিহারের প্রশাসন তাঁকে ঘুরিয়ে চলেছেন বলে অভিযোগ সুরেনবাবু৷ আর তা ঘিরেই ক্ষুব্ধ সুরেনবাবুর পরিবার৷ আলিপুরদুয়ার- ১নম্বর ব্লকের পশ্চিম শালবাড়ির যে গ্রামে তিনি থাকেন, সেখানকার বাসিন্দারাও ফুঁসছেন৷ ঘটনার ন্যায্য বিচার চাইতে এককাট্টা হতে শুরু করেছেন তারা৷
গ্রামের বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় তৃমমূল নেতৃত্বও৷ দলের ব্লক সভাপতি বীরেন দাস বলেন, “সুরেনবাবু অভিযোগ জানানোর পর অনেকদিন কেটে গিয়েছে৷ ঘটনার তদন্ত এতটুকু তো এগোয়নি, বরং তদন্তের নামে কোচবিহারে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাকে বারবার দুর্ভোগে ফেলা হয়েছে৷ এটা মানা যায় না৷ দ্রুত ঘটনার বিচার না হলে আমরা দলের তরফে কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব৷” যদিও কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডের দাবি, “সুরেনবাবুর অভিযোগ দায়ের করার পরই গোটা ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেন৷ সেই তদন্ত এখনও চলছে৷”
সুরেনবাবুর অভিযোগও অবশ্য সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে নয়৷ তাঁর অভিযোগ তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে৷ তিনি অভিযোগ করেন, “চিকিৎসক যে আমার একটি কিডনি কেটে নিয়েছেন, অভিযোগ জানানোর সময় তার তথ্য-প্রমাণ পুলিশকে দিয়েছি৷ তারপর পুলিশের মাধ্যমেই জানতে পারি, আমার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে সরকারিভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা হবে৷ অথচ, সেই ডাক্তারি পরীক্ষার নামে একাধিকবার আমায় কোচবিহারে ডেকে নিয়ে গেলেও, এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে ন্যূনতম একটা আলট্রাসোনোগ্রাফিও করানো হল না৷ বিষয়টি নিয়ে পুলিশও যে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে চাপ দিচ্ছে, তেমন খবরও আমার কাছে নেই৷”
কোচবিহারের সিএমওএইচ সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ সেজন্য সুরেনবাবুর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য আমরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল পাঠাতে রাজ্যকে আর্জি জানিয়েছি৷ আশাকরি, দ্রুত সেই দল কোচবিহারে পৌঁছবে৷”