—ফাইল চিত্র
বন দফতরের হিসেব অনুযায়ী কার্শিয়াং বন্যপ্রাণ বিভাগে এ বছর এখনও পর্যন্ত হাতির আক্রমণে মারা গিয়েছেন ৬ জন। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে দাবি বন দফতরের। এই ঘটনায় চিন্তা বেড়েছে বনকর্তাদের। বনবস্তি এলাকায় বাড়িতে মদ, হাঁড়িয়া বা কট (গোর্খাদের মধ্যে জনপ্রিয় দেশি মদ) যাতে বাড়িতে মজুত না রাখা হয়, তার পরামর্শ দিয়ে লিফলেট বিলি করতে শুরু করেছেন বনকর্তারা। তাঁদের দাবি, সন্ধেবেলা বা ভোরে একা বা মত্ত অবস্থায় রাস্তায় যাতে কেউ না বের হন তা নিয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চলছে। আবগারি দফতরের কর্তারাও নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
মেচি নদীর অববাহিকায় নকশালবাড়ি থেকে শুরু করে রোহিনী এবং সুকনা এলাকায় বার বার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গ্রামে ঢুকে আক্রমণ করছে বুনো হাতি। পুজোর পর থেকেই ধান ও ভুট্টার টানে গ্রামে ঢুকছে হাতি। গত মাসে পানিঘাটায় প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে হাতির হানায় প্রাণ গিয়েছে এক মহিলার। মঙ্গলবার টুকুরিয়াঝাড় রেঞ্জে জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহে গিয়ে বুনো হাতির আক্রমণে মারা গিয়েছেন এক ব্যক্তি। কার্শিয়াং বন্যপ্রাণ বিভাগের বনাধিকারিক শেখ ফরিদ বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি, পাহড়ি জনবস্তি এলাকায় দেশি মদ তৈরি এবং তা মজুত রাখার প্রবণতা থাকে। বাড়িতে মদ জমিয়ে রাখলে তার গন্ধেও হাতি আসে। তা না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’ শিলিগুড়ির আঞ্চলিক ডেপুটি আবগারি কালেক্টর বিজয় টিগ্গা বলেন, ‘‘আদিবাসী এলাকায় এবং চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় হাঁড়িয়া, দেশি মদ বা পাহাড়ের দিকে কট তৈরির প্রবণতা বেশি। আমরা নিয়মিত অভিযান চালাই। বন দফতর একটু সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের জানালে সেই এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’
বনকর্তারা মনে করছেন, মেচি করিডর এলাকায় ধীরে ধীরে জনপদ বাড়ছে বলে যাতায়াতের পথে বাধা পাচ্ছে হাতি। তার জেরে হাতি-মানুষ সংঘাতের সম্ভাবনাও বেড়ে যাচ্ছে। গত বছর ১০ জন মারা গিয়েছিল ওই এলাকায়। গত কয়েক মাস ধরে কার্শিয়াং বন্যপ্রাণ বিভাগের বাগডোগরা, নকশালবাড়ি, টুকুরিয়াঝাড়, বামনপোখরি এলাকায় হাতির হানায় আতঙ্কিত বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। দার্জিলিং এবং কার্শিয়াং বন্যপ্রাণ এলাকায় এখন ১৩০টি হাতি বিভিন্ন দলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যৌথ বন সুরক্ষা কমিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাতি তাড়ানোর সামগ্রী সরবরাহ, স্কোয়াডগুলিকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাহাড় ও পাদদেশ এলাকায় ৫০০টি বিদ্যুতের খুঁটিতে আলো লাগাতে বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কথা বলছেন বনকর্তারা।