কলেজ পড়ুয়া এক যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে প্রেমিকা এবং তার মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যদিও তাঁরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সোমবার সকালে বালুরঘাটের বাড়ি থেকে পুলিশ ওই দুজনকে গ্রেফতার করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগের (৩০৬ ও ১০৯) ধারায় মামলা দায়ের করে তাদের আদালতে হাজির করে। বালুরঘাট আদালতের বিচারক মা ও মেয়েকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিেয়ছে, বালুরঘাট শহরের ঘাটকালীপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রথম বর্ষের ছাত্র শুভঙ্কর কর্মকারের (১৮) দেহ রবিবার সকালে আত্রেয়ী নদীর জলে ভেসে ওঠে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। এরপরই মৃতের জেঠু সুদর্শন কর্মকার ভাইপো শুভঙ্করের আত্মহত্যার পিছনে প্রেমিকা ও তার মায়ের প্ররোচনা রয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই পুলিশ ওই দুজনকে গ্রেফতার করে।
এদিন ডেপুটি পুলিশ সুপার (সদর) সৌম্যজিৎ বড়ুয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শুভঙ্কর কলকাতার আশুতোষ কলেজে জুলজি অনার্স নিয়ে প্রথ মবর্ষে ভর্তি হয়েছিল। স্থানীয় কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণীর সঙ্গে শুভঙ্করের গত এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মেয়ের বাড়ির লোকেরা সম্পর্ক মেনে নেননি বলে শুভঙ্করের পরিবারের দাবি। কলকাতা থেকে শুভঙ্কর বালুরঘাটে এলে কয়েকদিন আগে তাকে রাস্তায় চড় মেরেছিলেন বলেও জেরায় অভিযোগ স্বীকার করেছেন ধৃত ছাত্রীর মা। তবে দুজনের মধ্যে যোগাযোগ ছিল।
সৌম্যজিৎবাবু জানিয়েছেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পিকনিক রয়েছে বলে শুভঙ্কর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি না ফেরায় নিখোঁজ ডায়রি করেন শুভঙ্করের বাড়ির লোক। শনিবার সকালে শহরের সরোজসেতুর উপর থেকে শুভঙ্করের সাইকেল পুলিশ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, শুভঙ্কর প্রেমিকার সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা বলেছেন শুক্রবার রাত ১১টা ২৩ মিনিটে। পুলিশ প্রেমিকার মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান করছে অপমান ও অভিমানে শুক্রবার রাতেই সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন শুভঙ্কর। বেশি রাতে সেতুতে সে সময় কেউ না থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
শুভঙ্করের আত্মহত্যা করার ঘটনা মেনে নিয়ে তার পিছনে প্রেমিকা ও তার মায়ের প্ররোচনাকেই অভিভাবকেরা দাবি করেছেন। এদিন আদালতে ধৃতেরা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।