আলু বোঝাই এই ট্রাকের উপর থেকেই উদ্ধার হয়েছে মৃতদেহটি। ময়নাগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
গন্তব্য জলপাইগুড়ি থেকে অসম। মালবাজারের কাঠামবাড়ি থেকে এক প্রস্ত আলু বোঝাই করার পরে ট্রাক দাঁড়িয়েছিল ক্রান্তির গঙ্গাদেবী চৌরঙ্গি এলাকায়। সেখানেও আলুর বস্তা ওঠে। তার পরে, শনিবার সকালে ময়নাগুড়ির অসম মোড়ের একটি পেট্রোল পাম্প লাগোয়া ওজন কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ছিল বারো চাকার ট্রাকটি। সে ট্রাকের উপর থেকে দড়ি বাঁধাঅবস্থায় এক পুরুষের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় দানা বাঁধল রহস্য। কারণ, ট্রাকের ক্যাবিনে তখন ঘুমন্ত চালক ও খালাসি।
জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু করা হয়েছে। চালক ও সহকারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মিললে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ বোঝা যাবে। সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’’
এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ স্থানীয় এক বাসিন্দা পাম্পের শৌচাগারে আসেন। ওই সময়ে তিনি দেখতে পান, ট্রাকের উপরে কেউ শুয়ে রয়েছেন। পা বাইরের দিকে ঝুলছে। সন্দেহ হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে পাম্পের কর্মীদের খবর দেন তিনি। পরে অন্য একটি ট্রাকের উপরে উঠে তাঁরা দেখতে পান, আলুর বস্তার সঙ্গেই মুখ ঢাকা অবস্থায় এক জনের দেহ বাঁধা রয়েছে। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করার সময় দেখে ট্রাকের ভিতরেই ঘুমিয়ে রয়েছে চালক এবং খালাসি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওজন করানোর জন্য অসম মোড়ের ওই কেন্দ্রে ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ পৌঁছয় ট্রাকটি। তখন ওজন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় চালক সেটি সেখানেই দাঁড় করিয়ে রাখেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, খুন করেই দেহ আলু বোঝাই ট্রাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। দেহের বুক, মাথা-সহ বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। সে ক্ষেত্রে চালক ও খালাসির অগোচরে কী ভাবে দেহটি ট্রাকে তোলা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন দুপুরে জলপাইগুড়ির সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পুলিশ মর্গে দেহটি ময়না-তদন্ত করার পরে, সংরক্ষণ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, নিহতের বয়স বছর পঁয়ত্রিশ-চল্লিশ। যে দু’টি এলাকা থেকে ট্রাকটিতে আলু বোঝাই করা হয়েছিল, পুলিশ সে সব জায়গাতে গিয়েওতদন্ত করছে।