তিস্তায় ভাসছে দেহ! — নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ে দুর্যোগ খানিক কমলেও বিপর্যয়ের খবর আসার বিরাম নেই। বৃহস্পতিবার সকালে কালিম্পংয়ের কাছে তিস্তায় একটি দেহ ভাসতে দেখা যায়। তা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর যায় পুলিশে। পুলিশ খরস্রোতা তিস্তা নদী থেকে দেহটি উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে পাঠিয়েছে। সেখানেই হবে ময়নাতদন্ত। কার দেহ, তা এখনও অজানা।
সিকিমে বৃষ্টি কিছুটা হলেও ধরেছে। ফলে জলস্তর নামছে সিকিম থেকে বাংলায় প্রবেশ করা সব ক’টি নদীরই। এরই মধ্যে বুধবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাত হয় সিকিমে। এর ফলে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জল বৃদ্ধি পায় তিস্তায়। তার প্রভাব এসে পড়ে বাংলার তিস্তা বাজারে। জলস্তর আচমকাই বৃদ্ধি পায়। সকালে দেওগ্রামের বাসিন্দারা লক্ষ করেন, তিস্তায় ভাসছে বড় কিছু। তা কাছাকাছি এলে তাঁরা বুঝতে পারেন, নদীতে ভেসে যাচ্ছে একটি মানুষের দেহ। শান্ত দেওগ্রামে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে তিস্তার বুক থেকে ভাসমান দেহটি উদ্ধার করে। তার পর তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় শিলিগুড়ির অনতিদূরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ সঠিক ভাবে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য জলস্তর নামতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত বছরের অক্টোবরে তিস্তার তাণ্ডবের জেরে নদীর ধার বরাবর এলাকার বড়সড় পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে কালিম্পং পাহাড়ে। ফলে তিস্তায় জলস্তর বাড়লেই তিস্তা বাজার এলাকায় জলস্ফীতি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
যদিও তিস্তা বাজার এলাকার সাধারণ মানুষ ভেবে পাচ্ছেন না, কোথা থেকে এল দেহটি! অনেকেরই দাবি, তিস্তার দু’ধার বরাবর সমস্ত জনবসতি আপাতত জলের নীচে। সেখানেই কোথাও কারও মৃত্যু হয়েছে কি না, তার খোঁজ চলছে। আবার অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত বছরে অক্টোবরে তিস্তায় বান ডেকেছিল। তখন সিকিমে একটি ড্যাম সম্পূর্ণ ধুয়ে নিয়ে গিয়েছিল তিস্তা। তার অনেক অংশই এখনও তিস্তার পলির তলায় চাপা পড়ে আছে। সেই সময় সেখানে কারও মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এত দিন পলিচাপা থাকার পর ইদানীং তিস্তায় আবার জলস্তর বৃদ্ধিতে সেই পলি ধুয়ে হয়তো দেহ বেরিয়ে এসেছে। আবার সিকিমে তিস্তার সাম্প্রতিক তাণ্ডবের জেরেও কারও মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। দেহটি অশনাক্ত অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।