ফাইল চিত্র।
নিয়ম বদলের জেরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এর জেরে সমাবর্তন পিছিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। আগে আচার্য বা রাজ্যপালের অনুমোদন পেলেই সেই মতো সমাবর্তন হত। তিনি কবে থাকতে পারবেন, তা জানালে সমাবর্তনের দিনক্ষণ ঠিক হতো। এখন আর আচার্য নয়, রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমতি নিয়েই সব করতে হবে। এই নিয়ম হওয়ার মুখে আচার্য তথা রাজ্যপালের কাছে সমাবর্তনের জন্য গত ডিসেম্বরেই সময় চাওয়া হয়। ডিসেম্বরেই সমাবর্তনের কথা ছিল। এখন ফের উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এ বারই প্রথম সমাবর্তনে মুখ্যমন্ত্রীর আসারও কথা। তবে পরিস্থিতি যা, তাতে জানুয়ারির মধ্যে সমাবর্তন হচ্ছে না বলেই খবর।
সময়ে সমাবর্তন আগেও অনেক সময়ে হয়নি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তা ছাড়া, আচার্যের সময় পাওয়াটাও ছিল প্রধান ব্যাপার। তবে এখন থেকে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানিয়েই সব করার নির্দেশ রয়েছে। আচার্যের সঙ্গে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর যোগাযোগ করবেন না। আচার্যকে কিছু জানাতে হলে রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর থেকেই জানানো হবে। উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নতুন নিয়মে এখন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর থেকেই সমাবর্তনের দিনক্ষণ কবে হবে, সে বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হবে। আমরা প্রস্তুত। উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছেও সমাবর্তনের সময় নির্দিষ্ট করতে আবেদন জানানো হয়েছে। কবে তা হবে, উচ্চ শিক্ষা দফতরের সম্মতি পেলে ঘোষণা করা হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে না হলেও ফেব্রুয়ারি মাসেই সমাবর্তন হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।
সমাবর্তনে স্নাতকোত্তর পড়ুয়া এবং গবেষকদের শংসাপত্র দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের বৈঠকে তা চূড়ান্ত হয়। প্রথা মেনে সমাবর্তনের দিন আচার্য এলে তিনি কোর্টের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করতেন। ওই সমস্ত শাংসাপত্র চূড়ান্ত ঘোষণা করে সিলমোহর দিতেন। ‘রেজিস্টার’ খাতায় আচার্য সই করতেন। এর পরেই শুরু হত মূল অনুষ্ঠান। এখন নতুন নিয়মে আচার্যের জন্য আর অপেক্ষা করতে হবে না। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরেই শংসাপত্র চলে যাবে। সেগুলির ক্ষেত্রে আচার্যের সম্মতির বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দফতর দেখবে। এমনকি, সমাবর্তনের আমন্ত্রণপত্রও উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে আচার্যের কাছে পাঠানো হবে।
সমাবর্তন পিছিয়ে যাচ্ছে বলে চিন্তায় পড়ুয়াদের একাংশও। তাঁদের কথায়, কোথাও চাকরির ক্ষেত্রে যোগ দিতে বা আবেদন করতে শংসাপত্র দরকার হয়। ‘পোস্ট ডক্টরেট’ স্তরের পড়াশোনা বা ‘রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট’ হওয়ার ক্ষেত্রেও গবেষকদের শংসাপত্র জরুরি। বিএডে ভর্তির ক্ষেত্রে অনেক সময় শংসাপত্র দেখতে চাওয়া হয়।