দার্জিলিঙের অবজ়ারভেটরি হিলে বছরের শেষ দিনে পর্যটকদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
ঠান্ডা হাওয়া বইছে। তবে উৎসাহে খামতি নেই। চার পাশ থেকে ভেসে আসছে গিটারের টুংটাং, গানের সুর। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা দার্জিলিঙের ম্যাল।
মঙ্গলবার রাত যত বেড়েছে, মহাত্মা গান্ধী রোড, এইচডি লামা রোড দিয়ে ম্যাল-মুখী জনতাও তত বেড়েছে। পর্যটন সংস্থাগুলোর দাবি, পুজোর মরসুমের থেকে পাহাড়ে ভিড় বেশি হয়েছে বড়দিন, নতুন বছরের মরসুমে। বেড়েছে গাড়িভাড়া।
সরকারি হিসাব বলছে, দার্জিলিঙের ৯০ শতাংশ হোটেল, রিসর্ট বা লজ পুরো ভর্তি। কালিম্পংয়ে তা ৮০ শতাংশের কাছাকাছি। রাস্তায় বার বার ধসের সমস্যায় ভুগতে থাকা উত্তর সিকিমেও এ মরসুমেই প্রথম ৬০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। নতুন বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভিড় থাকবে বলে আশা পর্যটন সংস্থাগুলির।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সিটং, লামাহাটা, লাভা-লোলেগাঁও, পেডং, ঋষিখোলার মতো এলাকাতেও থাকতে আগ্রহী অনেকে। পর্যটন সংগঠন ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘রেল, বিমান এবং বাসের টিকিটের দাম আচমকা বেড়ে যাওয়ায় কিছু পর্যটক বুকিং বাতিল করেছেন। তাঁরা এলে, এ বার তিল ধারণের জায়গা হত না।’’
‘কালিম্পং হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সিদ্ধান্ত সুদ বলেন, ‘‘কাঞ্চনজঙ্ঘা রেঞ্জ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। কালিম্পং জুড়ে বর্ষবরণে পর্যটকদের ভিড় রয়েছে। পর্যটন, পরিবহণ সংস্থা থেকে শুরু করে হোটেল মালিক— সবাই খুশি।’’
এ মরসুমে গাড়িভাড়া বাড়লেও তা মাত্রা ছাড়ায়নি বলে জানাচ্ছেন পর্যটকেরা। বেঙ্গালুরু থেকে আসা প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তী বা হাওড়ার শোভন সেনের অভিজ্ঞতা, শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ে উঠতে চালকেরা কখনও ৫০০, কখনও আবার হাজার টাকা বেশি চাইছেন। তবে দর কষাকষিতে তা কমছেও।
উৎসবের মরসুমে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপা। সপরিবার রাজস্থানে ছুটি কাটাতে যাওয়া অনীত এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখাই আমার প্রধান কাজ। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি, নতুন বছরেও পাহাড়ে যেন শান্তি থাকে। শান্তি থাকলে পাহাড়ে পর্যটন থেকে উন্নয়ন— সবই স্বাভাবিক ভাবে চলবে।’’