ধার করে ঘর চলে দার্জিলিঙের

কোচবিহার, জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে দক্ষিণ জেলাগুলিতে ধান পাঠালে বহন খরচ বেশি হবে। সেই তুলনায় মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে পাঠালে খরচ কম হতে পারে। ওই জেলাগুলিতে ধানের উৎপাদনও এ বারে খুব ভাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share:

শীতে কাঁপছে দার্জিলিং। ছবি- লাইব্রেরি থেকে সংগৃহীত।

নিজেদেরই চাল আমদানি করতে হয় পড়শি জেলাগুলি থেকে। তাই, দক্ষিণবঙ্গের জন্য চাল দিতে অপারগ দার্জিলিং জেলা। বরং নিজেদের ঘাটতি পূরণে এ বারেও তারা পড়শি জেলাগুলির মুখাপেক্ষী।

Advertisement

প্রতি বছরই দার্জিলিং জেলার এই এক সমস্যা, জানালেন জেলা খাদ্য দফতরের এক কর্তা। তিনি জানান, জেলার প্রয়োজনের তুলনায় গত বারেও উৎপাদন কম হয়েছে। এ বারে ১০ শতাংশ জমিতে কম চাষ হয়েছে। তাই উৎপাদন ১০ শতাংশ কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মরসুমে ৮১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে। তার মধ্যে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ধান সরকার কিনবে বলে ঠিক করেছে। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন সরকারি কৃষি দফতরের কর্তাব্যক্তিরা। সরকারের ধান কেনা এখনও শুরু হয়নি। ধানের ফলন কম হয়েছে। জেলায় যে পরিমাণ ধানের উৎপাদন হয় তাতে জেলারই প্রয়োজন। ফলে শিলিগুড়ি থেকে কোনও ধান দক্ষিণবঙ্গে পাঠান যাবে না বলে দার্জিলিং জেলা খাদ্য নিয়মাক শুভাশিস পালিত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছন যাবে কি না, তা আপাতত বলা যাচ্ছে না। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে প্রয়োজনীয় চালের জোগান দিতে পাশের জেলাগুলি ধান নেওয়া হতে পারে।’’

তিনি জানান, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে দক্ষিণ জেলাগুলিতে ধান পাঠালে বহন খরচ বেশি হবে। সেই তুলনায় মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে পাঠালে খরচ কম হতে পারে। ওই জেলাগুলিতে ধানের উৎপাদনও এ বারে খুব ভাল। প্রয়োজন হলে ওই জেলাগুলি থেকে ধান যেতে পারে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায়। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, গত বছর জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ হাজার মেট্রিক টন। এ বছরও সেই লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। তবে এ বছর শিলিগুড়িতে সঠিক সময়ে জলের অভাবে ১০ শতাংশ জমিতে আমন চাষের পরিমাণ কমেছে। বিঘাপ্রতি ফলন ঠিক থাকলেও এর ফলে মোট উৎপাদন কম হবে বলে মহকুমা কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

Advertisement

এর মধ্যেই ধান অনেকের ঘরে উঠেছে। অভাবী বিক্রির অভিযোগও উঠেছে। ফড়ে দৌরাত্ম্য আটকাতে কৃষক প্রতি ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে। তাই জেলায় চালের জোগান দিতে অন্য জেলা থেকে ধান কিনে দেওয়া গেলেও স্থানীয় চাষিরা সরকারি মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে চাষিদের একাংশের অভিযোগ।

বুলবুলের দাপটে ধান নষ্ট হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায়। উল্টো দিকে, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে এ বারে ধানের ফলন খুবই ভাল। তা হলে কি দক্ষিণের ঘাটতি মেটাবে উত্তর? এই নিয়ে জল্পনা শুরু হলেও কোনও নির্দেশিকা আসেনি, জানিয়েছে, দার্জিলিং জেলা খাদ্য দফতর। গত বছরও রাজ্যের কয়েকটি জেলার প্রয়োজনীয় চালের জোগান দিতে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে ধান নেওয়া হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement