গ্রাস: পাহাড়ে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ বহুদিনের। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শমতো দার্জিলিং শহরে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করার জন্য এ বার সক্রিয় হলেন জিটিএ সদস্য তথা হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। দার্জিলিং পুরসভায় অজয়ের দল পাঁচ মাস ক্ষমতায় এসেছে। ইতিমধ্যে পুরসভা চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেল বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। দু’দিন আগে পুর এলাকার একটি বাণিজ্যিক ভবনের গোপন বেআইনি নির্মাণ কাজ তিনি নিজে দাঁড়িয়ে বন্ধ করেন।
এ নিয়ে অবশ্য পাহাড়ে নানা আলোচনা শুরু হয়। একাংশ বাসিন্দা, ব্যবসায়ী পুরসভায় কাজকে ‘অতিসক্রিয়তা’ বলে ভিতরে ভিতরে প্রচার শুরু করেছেন। এই অবস্থায় প্রকাশ্যে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মতামত জানিয়ে অজয় পাল্টা চাপের রাজনীতি শুরু করলেন বলে পাহাড়়ের নেতারা মনে করছেন। পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য যাতে হামরো পার্টির পুরবোর্ড পায়, তা তিনি চাইছেন।
অজয় বলেছেন, ‘‘পুরভোটে জেতার পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। চেয়ারম্যান রীতেশও ছিলেন। সেই সময় উনি দার্জিলিং শহরে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করতে বলেন। আমরাও শৈলশহকে প্রকৃতির মাঝে সুন্দর রাখতে চাই। তাই বাসিন্দাদের কাছে বেআইনি নির্মাণ না করার অনুরোধ করছি।’’ তিনি জানান, আমরা পুলিশকে বলব পুরসভাকে সাহায্য করতে। জেলা প্রশাসনও যাতে ব্যবস্থা নেয়, তা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলছি।
পুরসভা সূত্রের খবর, রাজ্যের পুর আইন অনুসারে দার্জিলিং শহরে ১১.৫ মিটার উচ্চতার মধ্যে বাড়ি তৈরি করতে হয়। শুধু বিশেষ অনুমতিক্রমে পুরসভা এবং সরকারি কয়েকটি ভবন ১৩ মিটারের মতো উচ্চতার রয়েছে। অভিযোগ, গত দুই দশক ধরে দার্জিলিং শহরে একের পর এক বেআইনি নির্মাণ হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু উচ্চতা নয়, বিল্ডিং প্ল্যান পুরসভা থেকে অনুমোদন বা পাশ না করে বহু কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুর অফিসারেরা জানান, একাধিক বাণিজ্যিক ভবনে ভিতরে দেওয়াল গেঁথে ঘর তৈরি করা হয়েছে। পাহাড়ের ঢাল কেটে বহুতল তোলা হয়েছে। নিকাশি, পার্কিং ঠিক থাকছে না। একটি ভবনের গায়ে আরেকটি ভবন তৈরি করা হয়েছে। শুধু বাজার, দোকান, হোটেল, রেস্তরাঁ বা অফিস এলাকা নয়, ব্যক্তিগত বাড়ির ক্ষেত্রেও বেনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অজয় বলেন, ‘‘দার্জিলিং অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। সেখানে বাড়িঘর পুরোপুরি নিয়ম মেনেই করতে হবে। নইলে যে কোনও সময় বড় বিপদ হতে পারে।’’