ব্রিটিশ আমল থেকেই ভাড়া দেওয়া রয়েছে ঘর। দেখভাল করে ‘জমিদারি’ বিভাগ।
দার্জিলিং পুর এলাকায় এক দশক পরে, শতাধিক সরকারি দোকান ও বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ৷ প্রশাসন সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে পুরসভায় চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিলের বৈঠক হয়। সেখানে পুরসভায় আয় বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। শহরের বাড়ি ও দোকানঘরের ভাড়া বাড়ানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রায় ১১ বছর পরে, এ বার বাড়ি ও দোকানঘরের ভাড়া ৫০ শতাংশ বাড়তে চলেছে। তার পরে, প্রতি তিন বছর অন্তর ১০ শতাংশ করে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে দার্জিলিং চেম্বার অব কমার্স।
শৈলশহরের ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ৫০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি ‘বাড়াবাড়ি’ হয়ে যাবে। তা বিবেচনার জন্য পুরসভাকে আবেদন জানানো হয়েছে ব্যবসায়ীদের তরফে। দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনাও শুরু হয়েছে। পুর অফিসারেরা জানান, পাহাড়ে বহু ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক পুরসভার দোকান ও বাড়ি নিজেরা ভাড়া নিয়ে অন্যকে ভাড়া (সাব লেট) দিয়েছেন। অভিযোগ, সেখান থেকে মোটা টাকা রোজগারও করেন তাঁরা। এক অফিসারের কথায়, ‘‘ছোট দোকানেও যা রোজগার হয়, তাতে দ্বিগুণ ভাড়াও দেওয়া যায়। যদিও তা করা হয়নি। আর বড় দোকান আর ভাড়া দেওয়া দোকানের কথা তো বলাই বাহুল্য।’’
দার্জিলিং পুরসভার কর ও ভাড়া বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সির বিষ্ণু মাল্লা বলেন, ‘‘গত ১১ বছরে পুরসভা ভাড়া বাড়ায়নি। অনেক বকেয়াও রয়েছে। এ বার ভাড়া ৫০ শতাংশ হারে বাড়বে। ব্যবসায়ীদের, বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেই নির্দেশিকা জারি করা হবে।’’ তিনি জানান, আগামী মাসের গোড়ায় নোটিস পাঠানো শুরু হয়ে যাবে এবং ১ এপ্রিল থেকে হিসাব ধরেই ভাড়া নেওয়া হবে। সূত্রের খবর, শাসক ও বিরোধী —পুরসভার সব কাউন্সিলরই ভাড়া বৃদ্ধির ভাবনায় সহমত।
পুরসভা সূত্রের খবর, দার্জিলিং পুরসভার বহু সম্পত্তি রয়েছে। ব্রিটিশ আমল থেকে সেগুলি বিভিন্ন ভাবে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। চকবাজার, জজবাজারকে কেন্দ্র করে সরকারি ঘর, দোকানই বেশি রয়েছে। পুরসভায় ‘জমিদারি’ বিভাগ তার দেখভাল করে। রাজ্যের অনেক পুরসভার তুলনায় দার্জিলিং পুরসভা ঘর ও দোকানের সংখ্যা বেশি। চকবাজারের দু’পাশে দোকান, সুমেরু মঞ্চ— সবই পুরসভার সম্পত্তি। সেখানে আশেপাশে অলিগলিতে ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকা অবধি ছোট থাকার ঘর রয়েছে। তেমনই ৭৫০ টাকা থেকে ১,১৫০ টাকা অবধি ভাড়ার দোকানও রয়েছে। বছরের পরে বছর ধরে ভাড়াটেরা রয়েছেন। বংশপরম্পরায় অনেকে ভাড়ার দোকানে ব্যবসা করছেন।
দার্জিলিং চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি জ্যোতিরত্ন তুলাধার বলেন, ‘‘ভাড়া বাড়ুক। কিন্তু একেবারে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বলা হয়েছে।’’