বেআইনি নির্মাণে কড়া হচ্ছে দার্জিলিং পুরসভা

পুরানো বাড়ি ধসে ৭ জনের মৃত্যুর পরে পাহাড়ে যথেচ্ছ নির্মাণ রুখতে বাসিন্দাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহে নামছে দার্জিলিং পুরসভা। ইতিমধ্যেই পুরসভার অফিসার-কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কোথায় চুপিসাড়ে নির্মাণ হচ্ছে সেই ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করেছেন।

Advertisement

রেজা প্রধান

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০১:২৬
Share:

পুরনো বাড়ি ধসে ৭ জনের মৃত্যুর পরে পাহাড়ে যথেচ্ছ নির্মাণ রুখতে বাসিন্দাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহে নামছে দার্জিলিং পুরসভা। ইতিমধ্যেই পুরসভার অফিসার-কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কোথায় চুপিসাড়ে নির্মাণ হচ্ছে সেই ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করেছেন। এলাকার কাউন্সিলরদেরও বাড়তি নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দার্জিলিঙের পুরসভার চেয়ারম্যান অমর রাই।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকার অন্তত ৭টি ওয়ার্ডের ৬০টি বাড়িতে নানা সংস্কারের কাজ হচ্ছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। কোথাও ছাদের উপরে পিলার তুলে ঘর বানানো হচ্ছে। আবার কোথাও দোতলা থেকে তিন তলা করার জন্য ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। সব ক্ষেত্রে পুরসভার প্রয়োজনীয় অনুমতি নেই বলেও সন্দেহ করছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কোথাও বিনা অনুমতিতে নির্মাণ হচ্ছে দেখলেই তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আইনি নোটিস জারি করে তা ভেঙে দেওয়াও হবে। সেই মতো তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে। আমরা পাহাড়বাসীর সহযোগিতা চাইছি।’’

পাহাড়ে অপরিকল্পিত ভাবে বহুতল তৈরি হয়েছে বলে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাকির হোসেন বস্তির ভেঙে পড়া চার তলা বাড়িতে উদ্ধারকাজ দেখতে শনিবার দার্জিলিঙে এসে অবৈধ বহুতল নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জিটিএ এবং দার্জিলিং পুরসভা উদ্যোগী হলে রাজ্যের তরফে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন রবিবার রাজ্যের আরও এক মন্ত্রীও জখমদের দেখতে এসে শৈল শহরের বহুতল নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এ দিন কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পৌঁচেছেন।

Advertisement

জখম যুবক মহম্মদ সালাউদ্দিনকে দেখতে রবিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। সালাউদ্দিনের আত্মীয় সাত বছরের ইশা পরভীন শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সেখানেও তাকে দেখতে যান গৌতমবাবু। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সালাউদ্দিনের পেটে রক্ত জমেছিল। তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। শিলিগুড়িতে যে ভর্তি রয়েছে তার চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে নিউরো সার্জেন পাঠানো হয়েছে। তার হাতে চোট রয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি দু’জনকে দেখে আহত বাকিদের দেখতে তিনি দার্জিলিঙে আসেন। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘পাহাড়ে ভবন তৈরিতে আইন মানা না হওয়াতেই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় প্রশাসনকেই উদ্যোগী হতে হবে। তবে আমরাও পাহাড়ের আধিকারিক এবং জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করব।’’

গত শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ জাকির হোসেন বস্তির চার তলা ভাড়ি ভেঙে পড়ে। বাড়িতে ৩টি পরিবার ভাড়া থাকত। শুক্রবার রাতে প্রথমেই দুই শিশু সহ ৮ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের সকলেরই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। স্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৭ জনের দেহ। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, চারতলা বাড়িটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। প্রতি বর্ষায় নানা ফাটলে জল চুইঁয়ে একটু একটু করে বাড়িটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলাতে বাড়িটিই ধসে পড়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement