প্রবীণদের কেউ চার দশক আগের স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন! নতুন প্রজন্মের চোখে কৌতূহল, বিস্ময়। বুধবার দুপুরের পর দার্জিলিং রাজভবন চত্বর যেন ডুব দিয়েছিল ইতিহাসের পাতায়।
একের পর এক লালবাতির কনভয় এসে থামছে রাজভবনের সামনে। এসইউভি খুলে মন্ত্রী-আমলারা ঢুকে যাচ্ছেন রাজভবনের ভিতরে। কেউ আবার বাইরে থেকে ভবন দেখে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ভবনে দিনভর শেষ মুহূর্তের ঝাড়পোঁছ চলছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক বসতে চলেছে দার্জিলিঙের রাজভবনে। রাতারাতি তাই বদলে গিয়েছে পর্যটন মরসুমে ভিড়ে ভরা শৈলশহরের চালচিত্র।
পাহাড়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার এটি দ্বিতীয় বৈঠক। প্রথমটি হয়েছিল চার দশক আগে, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলে। সেই বৈঠকও হয়েছিল দার্জিলিং রাজভবনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে সচিবালয় সরিয়ে আনেন হাওড়ার নবান্নে। আবার শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যায় দ্বিতীয় সচিবালয় করেন। সেই ভবন উদ্বোধনের সময়ে সেখানে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছিল।
প্রশাসন সূত্রে খবর, গুরুত্বপূর্ণ ২০-২৫ জন মন্ত্রীকে থাকতে বলা হয়েছে বৈঠকে। প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, বাকিরা না এলেও চলবে। দার্জিলিঙের রাজভবনের কয়েকটি ঘরে মন্ত্রীদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। রাজভবনের সভাঘরে দু’দিকে কম বেশি একশো জনের বসার জায়গা করা হয়েছে।
এ দিন থেকেই পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে দার্জিলিঙে। এর মধ্যেই চলেছে মোর্চার পাল্টা মিছিল। পর্যটকরা দিনভর দুই-ই দেখলেন। আবার তার মধ্যেই খুঁজে বের করলেন চেনা মন্ত্রীকে। শুরু করে দিলেন হাঁকডাক। ছাতা হাতে ম্যালে দাঁড়িয়ে বাগুইহাটির কোনও পর্যটক অমুক মন্ত্রীকে দাদা সম্বোধন করে তাঁর সঙ্গে গল্প করছেন তো মধ্য কলকাতার বাসিন্দা তমুক মন্ত্রীর সঙ্গে তুলে ফেলছেন নিজস্বী।
সত্তর ছোঁয়া বীরবাহাদুর ছেত্রী বলেন, ‘‘যৌবনে একবার দার্জিলিঙে মন্ত্রীদের বৈঠক দেখেছিলাম। এখন আবার দেখলাম। ভালই তো। মনে আছে, সে বার বৈঠকে দার্জিলিং অনেক কিছু উপহার পেয়েছিল।’’
এ বার কী ‘উপহার’ মিলবে, বীরবাহাদুরের মতো অপেক্ষায় আছে গোটা পাহাড়।