শুভ্রপথে: শৈলশহরের রাস্তায়। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
দার্জিলিঙের ঘুম স্টেশন, টয় ট্রেন লাইন থেকে টাইগার হিল, জোড়বাংলোর রাস্তা সাদা চাদরে ঢাকা। কনকনে ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই রাস্তায় নেমে পড়েন স্থানীয় লোকজন। আনন্দে আত্মহারা পাহাড়ে থাকা পর্যটকেরা। প্রশাসনের সতর্কবার্তার পরেই নতুন করে পাহাড়ের পথে অনেকেই।
সাদা বরফ আর টয় ট্রেন
সাদা বরফে ঢাকা লাইনের মাঝ দিয়ে ঝিকঝিক শব্দে ছুটে চলছে টয় ট্রেন। পর্যটকেরা কাচের জানলার ভিতর থেকে হাত নাড়ছেন, ছবি তুলছেন। সোনাদা, ঘুমের রাস্তা সাদা বরফে প্রায় ঢেকে গিয়েছে। রাস্তায় মানুষের ঢল। সর্বত্রই যেন সেলফি জ়োন। সোনাদা থেকে দার্জিলিং দিনভর বরফ নিয়ে খেলায় মাতল বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা। দেখা যায়, বরফ ঢিল ছোড়া থেকে মূর্তি বানিয়ে গাড়ির সামনে রেখে সমতলে নামছেন চালকেরা।
শৈলশহরে রাত
ম্যালে রাতে এত ভিড় কয়েক বছরে হয়নি বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তখনও যেন হালকা সাদা বরফের ছাউনি দিয়ে ঢাকা গোটা দার্জিলিং ম্যাল। সন্ধ্যায় ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যেও ছাতা মাথায় পর্যটকদের সেলফি আর আনন্দ। ম্যালের চারদিকে বসে চা-কফির চুমুকে গল্প, আড্ডা চলে। পর্যটন সংগঠনের কর্তা সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘এত বরফ আমি বহু বছর দেখিনি, শুনিওনি। দার্জিলিং সত্যিই কুইন অব হিলস। সেটা আবার প্রমাণ হল। টানা পর্যটকদের ফোনে জেরবার হচ্ছি।’’
উধাও করোনা
চকবাজার, জজবাজার, ম্যাল চৌরাস্তায় ক্রেতাদের ভিড়। সোয়েটার, টুপি থেকে শীতের পোশাক নিতে ঠাসা ভিড়ে পর্যটকদের অনেকেই করলেন কেনাকাটা। সেখানে দূরত্ব বিধি, মাস্কের বালাই নেই। অনেকে আড়ালে বলছে, দার্জিলিং পাহাড়ে আবার কিসের করোনা! বরফে যেন হারিয়ে গিয়েছে মাস্ক। যাবতীয় বিধিও। দিনভর মোমো, চাউমিন থেকে এগরোল, ঘুগনি এবং খাবারের হোটেলে ভিড়। বিক্রেতারা বলেন, বহুদিন পর বরফের জন্যই এতটা ব্যবসা।’’
খুশি পর্যটকেরা
কলকাতার বাসিন্দা তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেকবার এসেছি দার্জিলিঙের বিভিন্ন এলাকায়। বরফের দেখা পাইনি। তিন বছর আগে বরফ পড়ার কথা শুনে কলকাতা থেকে এসেও বরফের দেখা পাইনি। এ বার দার্জিলিঙেই সাক্ষাৎ দর্শন হবে ভাবতে পারিনি। এ যেন নতুন দেশে এসেছি।’’
গাড়ির অভাব
বরফের খবরে সকাল থেকে পাহাড়মুখী পর্যটকেরা। শিলিগুড়ি থেকে সরকারি, বেসরকারি বাস, ছোট গাড়িগুলি ঠাসা যাত্রী নিয়ে উপরে উঠতে থাকে। শিমূলবাড়ি থেকে কয়েকশো গাড়ির লাইন পড়ে। ঘণ্টাদুয়েক সেখানেই আটকে থাকে প্রচুর গাড়ি। দুপুর হতে না হতেই দার্জিলিং, সিকিম রুটের গাড়ির অভাব দেখা যায়। অভিযোগ, অনেকের কাছে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হয়েছে।