—প্রতীকী চিত্র।
গত চার দিনও সহায়ক মূল্যে কোনও ধান কিনতে পারল না দার্জিলিং জেলা খাদ্য দফতর। গত ১ নভেম্বর থেকে ধান কেনা শুরু হয়েছিল। আপাতত ৬টি ধান ক্রয় কেন্দ্র (সিপিসি) খুললেও শনিবার পর্যন্ত সেই ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে কোনও কৃষকই ধান বিক্রি করতে যাননি বলে দাবি। দফতরের আধিকারিকেরা চাষির ঘরে এখনও ধান না ওঠার দাবি করছেন। কিন্তু মহকুমার গ্রামীণ হাটগুলিতে ধান বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রি না হওয়ায় দফতরের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
অভিযোগ, মিল মালিকদের কাচা ধান নিয়ে অনিহা রয়েছে। তাতে কম চাল হয় বলে দাবি। মিলগুলিকে কুইন্টাল প্রতি ধান থেকে দফতরকে সেদ্ধ চাল ৬৬ এবং আতব চাল ৬৭ কেজি দিতে হয়। কাচা ধানে সেই পরিমাণ চাল বার না হলে তাঁরা লাভ কমের আশঙ্কা দেখছেন। অন্য দিকে, ক্রয় কেন্দ্রে ধান নেওয়াতেও উদাসীনতা রয়েছে। অল্প ধান নিলে মিলগুলিতে পৌঁছনো খরচ বেশির দাবি করছে। যদিও এমন অভিযোগ মানতে চায়নি জেলা খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। খাদ্য দফতরের মহকুমার আধিকারিক তারিকিউ আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘‘চাষিরা ধান নিয়ে গেলে নেওয়া হবে। কিন্তু গত কয়েকদিনে কোনও চাষিই ক্রয় কেন্দ্রে ধান নিয়ে যাননি। যারা ধান দেওয়ার সময় নিয়েছেন তাঁরাও মাঠেই ধান পড়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন।’’
এ বছর দার্জিলিং জেলা খাদ্য দফতর গত বছরের তুলনায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়েছে। কিন্তু যে ভাবে ক্রয় কেন্দ্রে ফাঁকা পড়ে থাকছে লক্ষ্যমাত্রা কতটা পূরণ হবে উঠছে প্রশ্ন। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রত্যেকবার প্রতিবেশী কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরের মত জেলা থেকে শিলিগুড়িতে চাল কিনে চাহিদার যোগান দিতে হয়। কেন্দ্রীয় খাদ্য দফত (এফসিআই) থেকে চাল নিতে হচ্ছে জেলাগুলিতে। তার পরও উত্তরবঙ্গ জুড়ে ধান কেনার প্রচার, সঠিক উদ্যোগের অভাবের অভিযোগ উঠছে।
অভিযোগ, ক্রয় কেন্দ্রে ফড়েদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। ঘুরপথে ধান দেওয়ার দিন পাওয়ার জন্য যোগাযোগ শুরু করছেন বেশকিছু ফড়ে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, মহকুমায় কৃষকবন্ধু প্রকল্পের অনুর্ভূক্ত ১৯ হাজারের মত চাষি রয়েছেন। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তবেই সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করা যাবে। কিন্তু ধান বিক্রির রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন ৩৭ হাজার চাষি। অভিযোগ কৃষকবন্ধু না থাকা বাকিদের অনেক রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন ফড়েদেরই একাংশ।