বেকায়দায়: বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়ায় ছাতা আর মোটরবাইক সামলাতে হিমশিম সওয়ারিরা। নিজস্ব চিত্র
একেই চলছে ‘লকডাউন’। তার দোসর এ বার ‘আমপান’।
বুধবার সকাল থেকেই কালো মেঘ এবং ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে কাঁপছেন মালদহের আমচাষিরা। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলার বোরো ধান চাষিদেরও। কয়েক জন চাষি আমপানের ভয়ে না পাকতেই কাটতে শুরু করেছেন মাঠের সোনালি ফসল।
মালদহ জেলায় প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। গত মরসুমেও জেলায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছিল। কিন্তু এ বারে করোনার প্রভাব পড়েছে ধান চাষেও। লকডাউন চলায় চাষের কাজে শ্রমিক মিলছিল না। আবহাওয়ার কারনে সঠিক সময়ে ধান রোপনও করতে পারেননি চাষিদের অনেকে।
এ বার চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে ‘আমপান’। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার সমস্ত জমির ধান উঠতে সপ্তাহখানেক বাকি রয়েছে। বিভাস সরকার, দীনেশ সিংহ বলেন, ‘‘জমিতে আরও সাত দিন ধান রাখলে পুরোপুরি পুষ্ট হয়ে যেত। তবে এমন অবস্থায় ঝড় হলে ধান ঝরে পড়ে যাবে। তাই অপরিণত অবস্থাতেই ধান কেটে নিতে হচ্ছে।”
শুধু ধানই নয়, আমপান-আতঙ্কে আমচাষিরাও। মালদহে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। এ বারে শুরু থেকেই আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়েছে আমের উপরে। শীত দীর্ঘস্থায়ী থাকার কারণে সময়ে মুকুল আসেনি জেলায়। একই সঙ্গে দফায় দফায় ঝড়, শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমের ক্ষতি হয়েছে শুরু থেকেই। উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার জেলায় আম উৎপাদনের সম্ভাবনা ছিল ৩ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন আমের ক্ষতি হয়েছে। এমন অবস্থায় ঝড় হলে আমের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন চাষি থকে শুরু করে উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা।
পুরাতন মালদহের আম চাষি সুব্রত সরকার বলেন, “লকডাউনে আম রফতানিতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে এমনিতেই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। এরই মধ্যে ঝড় হলে আম ঝরে যাবে।” উদ্যান পালন দফতরের সহ-অধিকর্তা মালদহের রাহুল চক্রবতী বলেন, “বৃষ্টি আমের পক্ষে উপযোগী। তবে ঝড় হলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।”