এক মাসের আগাম ওষুধ নিতে চড়া রোদ মাথায় নিয়ে শহরের সাধনা মোড় এলাকার দোকানে হাজির বৃদ্ধ প্রভাত মণ্ডল, উজ্জ্বল চক্রবর্তীরা।
আবার তহবাজারের পাইকারি সিগারেট পানমশলা বিক্রেতার দোকানে গিয়ে খুচরো বিক্রেতাদের শুনতে হলো, দাদা এক-দু’মাসের বিড়ি সিগারেট যা লাগে দোকানে স্টক রাখুন। জিএসটি চালু হলে কোনটার দাম কী হবে বলা যাচ্ছে না।
কোম্পানিগুলো ডিস্ট্রিবিউটারদেরও জিনিস দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। জিএসটি চালুর ২৪ ঘন্টা আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহর সহ আশপাশের গঞ্জ এলাকাতেও ওই সমস্ত জিনিসের দাম বাড়া-কম নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে কাবু বালুরঘাট শহরের খাদিমপুর এলাকার প্রভাতবাবুর মতো শহরের প্রাচ্যভারতী এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুভাষ সাহাকেও প্রতি মাসে নিয়ম করে হাজার টাকার বেশি ওষুধ খেতে হয়। সাড়ে তিন নম্বর মোড়ের ওষুধের দোকানগুলি থেকে ইতিমধ্যে সুগার প্রেসার সহ নানা অসুখে ভোগা ‘মান্থলি খরিদ্দার’ রোগী ও তাদের আত্মীয়দের কাছে জিএসটি চালুর পর অন্তত মাস খানেক ওষুধ নাও মিলতে পারে বলে আশঙ্কার বার্তা পৌঁছে গিয়েছে। তাই অন্তত আগাম দু’মাসের ওষুধ কিনে রাখতে দোকানে দোকানে ভিড়। একরাশ উৎকন্ঠা ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। কেননা জিএসটির নামে এক শ্রেণীর হোলসেলাররা জিলিসের দাম বাড়াতে শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জিএসটির প্রভাবে শহরের খুচরো ওষুধ বিক্রির দোকানে ওষুধের যোগানে টান পড়ার কোনও খবর পাননি জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে। তিনি বলেন, জেলার হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ওষুধের অভাব নেই। অবশ্য খোলা বাজারে কী চলছে, তা জানা নেই বলে সুকুমারবাবু জানিয়েছেন।
তবে বালুরঘাটের বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি আনন্দ দত্তর কথায়, ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ডিসট্রিবিউটররা চলতি মাসের ২৫ তারিখের পর থেকে খুচরো দোকানগুলিতে ওষুধ সরবরাহ ও অর্ডার নেওয়া আপাতত বন্ধ রেখেছেন বলে জানা গিয়েছে।
এর ফাঁকে শহরের কয়েকটি বড় ওষুধ বিক্রেতা ফার্মেসির তরফে জানানো হয়, জিএসটি চালুর পর দাম, দর দেখে কোম্পানিগুলি ওষুধ বাজারে ছাড়তে কত সময় নেবে বলা যাচ্ছে না। তবে তাঁদের কাছে ওষুধের স্টক যা আছে, তাতে কিছু দিন সমস্যা হবে না। আশঙ্কার মধ্যে অভয়বার্তা বলতে এটুকুই।