উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস। —ফাইল চিত্র।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ শেষ। শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের কর্মীদের (এনবিএসটিসি) নভেম্বরের বেতন হয়নি বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, নিগমের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরাও এ দিন পর্যন্ত পেনশন পাননি।
চলতি বছরে এই প্রথম মাসের ৬ তারিখ কেটে গেলেও বেতন ও পেনশন না মেলার দাবি করেছেন নিগমের কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের একাংশ। নিগমের রায়গঞ্জ, মালদহ, বালুরঘাট, শিলিগুড়ি, কোচবিহার-সহ বিভিন্ন ডিপোর কর্মীদের ‘কবে পেনশন মিলবে?’— এ প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে নিগমের তৃণমূলপন্থী কর্মী সংগঠনের নেতারা। এ বিষয়ে নিগমের চালক ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহকারী সাধারণ সম্পাদক প্রণব বসাক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর দাবি, দু’-এক দিনের মধ্যেই সমস্যা মিটে যাবে। নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, “বেতন ও পেনশন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তা মিটেছে। বেতন ও পেনশনের সরকারি নির্দেশ চলে এসেছে। আশা করি, শনিবারের (আজ) মধ্যে কর্মরতেরা বেতন ও অবসরপ্রাপ্তেরা পেনশন পেয়ে যাবেন।”
নিগম সূত্রে খবর, প্রতি মাসে কর্মীদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন বাবদ বরাদ্দ টাকার ১০ শতাংশ নিগম কর্তৃপক্ষ দেন। ৯০ শতাংশ রাজ্য সরকার বরাদ্দ করে। নিগম কর্তৃপক্ষের দাবি, ইতিমধ্যেই বেতন ও পেনশনবাবদ নিগমের ১০ শতাংশ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের তরফে বাকি ৯০ শতাংশ টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় বেতন ও পেনশন দেওয়ায় জটিলতা হয়েছে। সিআইটিইউ অনুমোদিত নিগমের এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য স্মরজিৎ বল বলেন, “সারা মাস মুদিখানা, আনাজ-সহ বিভিন্ন দোকানে ধারে খাদ্যসামগ্রী কিনে নিগমের বহু কর্মী সংসার চালান। তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচও রয়েছে। সময় মতো বেতন না পাওয়ার কারণে কর্মীদের রাস্তাঘাটে পাওনাদারদের কথা শুনতে হচ্ছে।” নিগমের পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক নীলমণি পালের দাবি, নিগমের অবসরপ্রাপ্ত বহু কর্মীর পেনশনের টাকায় ওষুধের খরচ চলে। কর্মরত অবস্থায় মৃত নিগম-কর্মীদের পরিবারের খরচও পেনশনের টাকায় চলে। তিনি বলেন, “সময় মতো পেনশনের টাকা হতে না পেলে সমস্যা তো হবেই।”
নিগমের রায়গঞ্জ ও মালদহ ডিপোর চুক্তিভিত্তিক একাধিক চালক ও কন্ডাক্টারের অভিযোগ, বছরখানেক আগে নিগম কর্তৃপক্ষ চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন দু’হাজার টাকা কমিয়ে দেন। বালুরঘাট ডিপোর চুক্তিভিত্তিক এক চালকের কথায়, “প্রতি মাসে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা বেতন পাই। ওই টাকায় একেই সংসার চলে না, তার উপরে বেতন পেতে এত দেরি হলে, সমস্যা তো হবেই।”