ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল। বৃহস্পতিবার, মহাষষ্ঠীর সকালে বালুরঘাট শহরের বেলতলাপার্ক নিউটাউন ক্লাবের দুর্গাপুজো ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী।
অভিযোগ, ওই ক্লাব চত্বরে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে তা দেখেন সাধারণ মানুষ। শোনেন প্রধানমন্ত্রীর বাংলায় সম্ভাষণ। অভিযোগ, ভিড়ে কেউ ছিলেন মাস্কহীন হয়ে, কারও থুতনির নিচে ছিল মাস্ক। পুজো উদ্যোক্তারা অবশ্য স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অনুষ্ঠান হয়েছে বলে দাবি করেন।
মালদহ জেলার ১২টি বিধানসভা এলাকাতেই জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল শুভেচ্ছাবার্তা দেখানোর ব্যবস্হা করেছিল বিজেপি। তবে মূল অনুষ্ঠান হয় দলের জেলা কার্যালয়ে। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রায় ৫০টি চেয়ার পাতা হয়েছিল। সামনের সারিতে বসে ছিলেন উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু, দলের রাজ্য নেতা বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী, জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল।
এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের কিছু বাছাই করা ক্লাবের দুর্গাপুজো ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন। জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রধানমন্ত্রী শুরুতে বাংলায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন— ‘‘বাংলার এই পবিত্র ভূমিতে দুর্গাপুজো উৎসবে আপনাদের সকলের মধ্যে আসতে পেরে আজ আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।’’
নিউটাউনের পুজো উদ্যোক্তাদের অন্যতম অরিজিৎ মোহান্ত বলেন, ‘‘সামাজিক দূরত্ব মেনেই ওই অনুষ্ঠান হয়েছে।’’
এ নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দাস বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে যখন দুর্গাপুজো নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তখন মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর এক বার তা ভাবা উচিত ছিল।’’ বিজেপি সাংসদৃ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধনে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়তে দেখে তৃণমূল নেতৃত্ব এমন কথা বলে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।’’
অন্য দিকে, ষষ্ঠীর দিনে অনুগামীদের নিয়ে পুজো পরিক্রমা করলেন তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্র। বৃহস্পতিবার বিকেলে শতাধিক অনুগামী নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় দেড়শো গাড়ির কনভয়ে বালুরঘাট মহকুমা জুড়ে পুজো পরিক্রমা করেন তিনি। গঙ্গারামপুর, কুমারগঞ্জ ঘুরে হিলি হয়ে বালুরঘাট শহরের একাধিক বড় ক্লাবের পুজো পরিদর্শন করেন। বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছতেই বিপ্লবের সঙ্গে পুজোমণ্ডপে গিয়ে দেখা করেন মফিজুদ্দিন মিঞা, কল্যাণ কুণ্ডু, আশু সাহা, রাজেন শীলদের মতো তৃণমূলের একাধিক পুরনো নেতা।
তবে এ নিয়ে দলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, "করোনার কথা ভেবে দলের তরফে এমন কোনও কর্মসূচি আমরা রাখিনি। দলের দায়িত্ববান নেতা কেউ হলে তিনি হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে লোকজন নিয়ে ভিড় করে পুজো পরিক্রমা করতেন না।" যদিও এতে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিপ্লব। তাঁর কথায়, ‘‘সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে পুজো পরিক্রমা করে জনসংযোগ করায় আমি কোনও অন্যায় দেখছি না।’’