প্রতীকী ছবি।
মেডিক্যালে ভর্তি মেয়ে। প্রয়োজন ‘বি পজ়িটিভ’ রক্তের। তবে মালদহ মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ‘বাড়ন্ত’ রক্ত। অসুস্থ মেয়ের রক্তের জন্য দিশাহারা হয়ে পড়েন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব দীপক রায়। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে রক্তের ব্যবস্থা করল মালদহের ‘ব্লাড আর্মি’। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শহরের এক নার্সিংহোমে যমজ সন্তানের জন্ম দেন চন্দনা পাল। তাঁর অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজন ছিল ও নেগেটিভ রক্ত। চন্দনার রক্ত জোগাড়ের জন্য ভরা মাঘের শীতেও ঘাম ঝরাতে হয় পরিবারকে।
রক্ত নিয়ে এমনই ছবি এখন রোজকার হয়ে উঠেছে মালদহ ব্লাড ব্যাঙ্ক। ডিজিট্যাল বোর্ডে রক্তের গ্রুপের পাশে ‘নেই’ লেখা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, শনিবার পর্যন্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে এক ইউনিটও রক্ত নেই। অথচ, মালদহে দৈনিক কমপক্ষে প্রায় ৭০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া জেলায় প্রায় ৬০০ জনের মতো থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছে। তাদের জন্য প্রতি মাসে কমপক্ষে ৩০০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরে নির্ভর করে ইংরেজবাজার শহরে ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল, একটি মহকুমা এবং ১৫টি গ্রামীণ হাসপাতালও।
শুধুমাত্র মেডিক্যালেই দৈনিক কমপক্ষে গড়ে ১০০ জন করে প্রসুতি সন্তান প্রসব করেন। অস্ত্রোপচার হয় প্রায় ৩৫ শতাংশ। সেই সময় প্রসুতিদের কমপক্ষে এক ইউনিট করে রক্তের প্রয়োজন হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্লাড ব্যাঙ্কে কমপক্ষে ৫০ ইউনিট করে রক্ত মজুত রাখা উচিত। তবে এখন রক্ত সংকট চলছে ব্লাড ব্যাঙ্কে। করোনা আবহে এখন শিবির তেমন হচ্ছে না। ফলে রক্তের জোগান কমেছে ব্লাড ব্যাঙ্কে। ব্লাড আর্মির সদস্য স্নেহা জয়সওয়াল বলেন, “সামাজিক মাধ্যমে আবেদন করে আমরা দাতা সংগ্রহ করে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। ক্লাব, সংগঠনের এগিয়ে আসা উচিত।” মালদহ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, “রক্তের সংকট মেটাতে মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। রক্তদান নিয়ে সচেতন হতে হবে।”