মিছিলে পুলিশ ও বামকর্মীদের ধস্তাধস্তি। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
সিপিএমের মিছিলে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোর চেষ্টাকে ঘিরে পুলিশ ও দলীয় কর্মীদের ধস্তাধস্তিতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল এলাকা। সোমবার বিকেলে শিলিগুড়িতে মেঘদূত সিনেমা হলের সামনের ঘটনা।
এ দিন দাড়িভিট কাণ্ডে দু’জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে শিলিগুড়ির সিপিএম পার্টি অফিস থেকে মিছিল যাচ্ছিল হাসমি চকের দিকে। তার মাঝে মেঘদূত সিনেমা হলের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোর তোড়জোড় করেন বাম কর্মীরা। তা দেখেই পুলিশ এগিয়ে এসে বাধা দেয়। সেখানে ছিলেন শিলিগুড়ি থানার আইসি দেবাশিস বসুও। অভিযোগ তখনই বাম কর্মীদের একটি অংশ জ্যারিকেন থেকে কেরোসিন ও পেট্রল ঢেলে দেয় পুলিশকর্মীদের গায়ে। আইসির চোখেও সেই জ্বালানি এসে পড়ে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় আন্দোলনকারীদের তরফেও কয়েকজনকে জলের বোতল হাতে আইসি-র চোখেমুখে জল ছেটানোর ব্যবস্থা করতে দেখা যায়।
তারপরেও কুশপুতুল পোড়ানোর চেষ্টা চলায় আর এক অফিসার দাওয়া শেরপা এসে বাধা দেন। তাঁর চোখেও তেল এসে পড়ে বলে অভিযোগ। তারপরে বাম কর্মীদের হাত থেকে কুশপুতুল কেড়ে নেয় পুলিশ। পরে বামেদের মিছিল হাসমিচকে পৌঁছলে সেখানে খানিকক্ষণ পথ-অবরোধ করে সিপিএম কর্মীদের অনেকেই সিপিএম দফতরে ফিরে আসেন।
কিন্তু তেল ছোড়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে সিপিএমের সদর দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে পুলিশ। পরে দলীয় অফিস থেকে বের হওয়ার সময় পার্থ মৈত্র এবং সুব্রত চক্রবর্তী নামে দুই সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র। যদিও বামেদের দাবি হয়েছে ধস্তাধস্তিতে তেল ছিটে পুলিশের গায়ে লেগেছে, তা ইচ্ছাকৃত ঘটনা নয়। ধৃত কর্মীদের সঙ্গে থানায় দেখা করতে যান, সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য ও দলের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার।
পুলিশের দাবি, ব্যস্ত রাস্তায় কুশপুতুল পোড়ানো হলে, আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হবে ভেবেই পুলিশ বাধা দেয়। অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, কুশপুতুল পোড়ানো প্রতিবাদের একটি অঙ্গ। তাঁর কথায়, ‘‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের কুশপুতুল পোড়ালে দোষ নেই। কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল পোড়ালে তা অবমাননা?’’ অশোকবাবুর আরও দাবি, ‘‘তৃণমূল শিলিগুড়িতে সিপিএমকে ঠেকাতে পারছে না। সেই দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ।’’ এ দিনের ঘটনায় আরও কিছু বাম কর্মীকে খুঁজছে পুলিশ।