তৃণমূলের আমলেও এক টাকা লিজে নেওয়া জমির উপরে চলছে সিপিএমের পার্টি অফিস। সরকারের বদলের পর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় দখল হয়ে গিয়েছে সিপিএমের দলীয় অফিস। কিন্তু দিনহাটা জোনাল কমিটির ওই অফিস প্রায় একইরকম রয়ে গিয়েছে।
বাম কর্মীরা জানান, একবার ওই অফিস ভাঙচুর করে তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূল পরিচালিত দিনহাটা পুরসভা থেকে তাতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে বামেদের আবেদনের ভিত্তিতেই তা খুলে দেয় পুর কর্তৃপক্ষ।
দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের বিধায়ক উদয়ন গুহ দাবি করেন, জমি লিজ নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল অফিস করেছে। তা জেনেই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “লিজে নির্দিষ্ট করে সময় উল্লেখ করা নেই। এক টাকা লিজে যে তা নেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট। একটি রাজনৈতিক দলের অফিস বলে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে তা অনেকটা জায়গা দখল করে ছিল। পরে আলোচনার ভিত্তিতেই অফিসের বারান্দা ছোট করে নেয় তারা।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তারাপদ বর্মন বলেন, “আইন মেনেই জমি লিজ নিয়ে ওই পার্টি অফিস তৈরি করা হয়। ৯৯ বছরের জন্য তা লিজ নেওয়া হয়। আমরা নিয়মিত রাজস্ব জমা দিই।”
একসময় দিনহাটা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহর গড় বলেই পরিচিত ছিল। সিপিএমও সেখানে অনেকটাই শক্তিশালী ছিল। আশির দশকে দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন সেই সময়ের ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা দীপক সেনগুপ্ত। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছিলেন কোচবিহারের প্রভাবশালী সিপিএম নেতা মানিক দত্ত। সেই সময় এক টাকা লিজে দিনহাটা হাসপাতালের কাছে ওই পার্টি অফিস তৈরি করে সিপিএম।
সেই অফিসের সামনেই একের পর এক দলের শাখা সংগঠনের অফিস তৈরি হয়। সে সবের ক্ষেত্রে অবশ্য কোনও লিজ নেওয়া হয়নি। বাম আমলে ওই পার্টি অফিসে ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। দল ক্ষমতা থেকে সরতেই সব পাল্টে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল পুত্র উদয়নবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়।
বিরোধীদের অভিযোগ, সিপিএম ও বিজেপির একাধিক অফিসের দখল নেয় তৃণমূল। বহু অফিসে ভাঙচুর হয়। বৃহস্পতিবার ওই অফিসের সামনে থাকা সিপিএমের যুব ও শিক্ষক সংগঠনের অফিস ভেঙে দেয় পুরসভা। ওই জায়গায় স্টল তৈরি করে বেকারদের দেওয়া হবে বলে তাঁরা জানিয়েছে। কিন্তু জোনাল অফিস অক্ষুণ্ণ রেখে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “এখন আমরা প্রধান প্রতিপক্ষ। তাই বামেদের একটু অক্সিজেন যোগাতে কিছু ছাড় দিচ্ছে।”