মালদহ মেডিক্যালে আহত সুষমাদেবী। — নিজস্ব চিত্র
পারিবারিক বিবাদের জেরে তৃণমূল সমর্থিত এক পরিবারের উপরে হামলার অভিযোগ উঠলো সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে মালদহের মোথাবাড়ির মহেশ্বর পাড়ায় ওই হামলায় আহত হয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত দুই মহিলা সহ তিনজন। এক মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রামপঞ্চায়েত সদস্যা, তাঁর স্বামী ও অনুগামীদের বিরুদ্ধে মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্তের পরিবার। যদিও ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যার অভিযোগ অনাস্থাতে সায় না দেওয়াতেই এই অভিযোগ আনা হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, মোথাবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের মহেশ্বর পাড়ার বাসিন্দা শঙ্কর দাস পেশায় টোটো চালক। দিন দুয়েক আগে টোটো নিয়ে ফেরার পথে প্রতিবেশী পূর্ণিমা দাসের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে যায় শঙ্কর। অভিযোগ, এ দিন রাতে শঙ্করবাবুর স্ত্রী সুষমাদেবী বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন তাঁকে গালিগালাজ করা হয়। প্রতিবাদ করায় সুষমা দেবীর উপরে হামলা চালানো হয়। হামলার নেতৃত্ব দেন সিপিএমের গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য তাপসী দাস ও তাঁর স্বামী সুদীপবাবু। সুষমাদেবীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন তাঁর স্বামী শঙ্কর ও স্কুল পড়ুয়া মেয়েও।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক হইচই পড়ে যায়। স্থানীয়রা ওই তিনজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যান বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে। সুষমাদেবীর আঘাত গুরুতর থাকায় তাঁকে রাতেই স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুষমাদেবীরা এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। আর ওই এলাকায় অধিকাংশ পরিবারই সিপিএমের সমর্থক। আর তাপসীদেবীর আত্মীয়া পূর্ণিমাদেবী। তাঁদের হয়ে কথা বলতে গিয়েই বচসায় জড়িয়ে যান তাঁরা।
এ দিনের ঘটনার জেরে শঙ্করবাবু মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে তাপসীদেবী ও তাঁর স্বামী সুদীপবাবু সহ মোট ১২ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সুষমাদেবী বলেন, ‘‘আমাদের উপরে পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। কারণ আমরা তৃণমূল করি। গ্রামের বাকিরা সিপিএম করে। সিপিএম না করায় গ্রামপঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর স্বামী আমাদের উপরে চড়াও হয়েছে। ব্লক নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তাপসীদেবী বলেন, ‘‘সম্প্রতি মোথাবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা হয়েছিল। সেখানে আমি তৃণমূলকে সমর্থন না করায় এই ভাবে আমাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ্যে আসবে।’’