মালদহ জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি সহ জেলা পরিষদ ও দুই পুরসভাই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে চলে গিয়েছে। অথচ সেই মালদহে তৃণমূলকে নয়, কংগ্রেসকেই এখনও প্রধান বিরোধী শক্তি বলে মনে করে সিপিএম। দলের মালদহ জেলা সম্মেলনের রাজনৈতিক সাংগঠনিক প্রতিবেদনে সিপিএম এমনটাই দাবি করেছে। তবে মালদহে বিজেপির উত্থানে যে তাঁরা আতঙ্কিত তা প্রতিবেদনের ছত্রে ছত্রে উল্লেখ রয়েছে। এ দিকে, জেলা সম্মেলনের আগে দলের ২৪টি এরিয়া সম্মেলনে একাংশ পার্টি সদস্যের হাজির না হওয়া এবং এখনও দলীয় ৩২৮টি শাখায় কোনও মহিলা সদস্য না থাকার বিষয়টি প্রতিবেদনে কবুল করা হয়েছে।
শনিবার থেকে পুরাতন মালদহের বেনফিস হলঘরে শুরু হয় সিপিএমের ২২ তম মালদহ জেলা সম্মেলন। রবিবার তা শেষ হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, এই সম্মেলনের শুরুতেই ৪০ পাতার রাজনৈতিক সাংগঠনিক প্রতিবেদনটি পেশ করা হয়। জেলার বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রতিবেদনের ৩৬ নম্বর পাতায় বলা হয়েছে, বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলায় জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতে প্রায় সমান আসন পায় কংগ্রেস ও বামেরা। পরে তৃণমূল অধিকাংশই দখল করেছে। তবু এ কথা বলা যায় না যে তৃণমূল এই জেলায় প্রধান বিরোধী শক্তি। জেলায় এখনও প্রধান বিরোধী শক্তি কংগ্রেসই।
এ দিকে বিজেপিকে নিয়ে সিপিএমের শঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, বিগত লোকসভা নির্বাচনের সাফল্যকে পরবর্তী নির্বাচনে বিজেপি ধরে রাখতে পারেনি ঠিকই। কিন্তু তাঁরা বৈষ্ণবনগরের বিধানসভা আসনটি পেয়েছে। ছোটখাটো ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা জেলায় মিছিল বের করছে।
আত্মসমালোচনার সুর মিলেছে এরিয়া কমিটির সম্মেলন পর্ব বিশ্লেষনে। সেখানে প্রতিবেদনে পরিসংখ্যান তুলে জানানো হয়েছে যে ২৪টি এরিয়া কমিটির সম্মেলনেই একাংশ পার্টি সদস্য হাজির থাকেনি। সবচেয়ে করুণ দশা বামনগোলা উত্তর কমিটির সম্মেলনে। সেখানে ১৫৪ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ৮৯ জন হাজির হয়েছিলেন যা ৫১.৭৯ শতাশ। এছাড়া গাজোল মধ্য, রতুয়া একের ২, গোলাপগঞ্জের সম্মেলনেও হাজিরা কম ছিল। সেটা কেন তা বিশ্লেষণ করার কথাও বলা হয়েছে। এদিকে পার্টি সংগঠন নিয়ে আলোচনায় কবুল করা হয়েছে যে দলের প্রার্থী সদস্য করার ক্ষেত্রে মহিলা ও কমবয়সিদের উপর জোর দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে জেলায় দলীয় ৫৯১ টি শাখার মধ্যে ৩২৮টি শাখাতেই এখনও কোনও মহিলা সদস্য নেই। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে এবং সেখানে ৫০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত।