ফাইল চিত্র।
গত ১৯৮৭ সালে শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে তিনবারের রাজ্যের ক্ষমতাসীন পুরমন্ত্রী। বুদ্ধদেববাবুর ক্যাবিনেটের প্রভাবশালীর সঙ্গে তাঁকে উত্তরবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও বলা হতো। তার পরে আবার কঠিন সময়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে মেয়র এবং শেষে, ২০২১ সালে ভোটের আগে সেই পুরসভার প্রশাসক থেকে তিন দশকের বৃত্তটাকে সম্পূর্ণ করছেন অশোক ভট্টাচার্য। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়া এবং ২০২১ সালের প্রত্যাবর্তনের লড়াইয়ে দুই দফায় বিধানসভায় হার ছাড়া কোনওদিন ভোটে হারেননি অশোকবাবু।
আপাতত এখন অবসর জীবনে ফিরে দেখা তিন দশকের স্মৃতিগুলিকে লিপিবদ্ধ করতে ব্যস্ত অশোকবাবু। বাম আমল থেকে তৃণমূল আমল-শিলিগুড়ি শহরের পাঁচ বারের বিধায়কের অভিজ্ঞতা বই আকারে আসতে চলেছে। দুই আমলের সুখকর এবং বিরূপ স্মৃতিও থাকছে বইয়ে পাতায়। লকডাউন, করোনাকালে ঘরে বসে লেখা শেষ করে আগামী পুজোর সময় তা প্রকাশের ইচ্ছে রয়েছে এই প্রবীণ বাম নেতার।
মনমোহন সিংহ থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, জ্যোতি বসু বা প্রণব মুখোপাধ্যায় থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— অশোকবাবুর লেখায় এমন বহু সাক্ষাৎ, ঘটনার অজানা বিবরণ থাকবে। সঙ্গে চেষ্টা চলছে বিভিন্ন সময়ের তিন দশকের কিছু উল্লেখযোগ্য ছবিও বইয়ে রাখতে। আপাতত ছুটির মেজাজে সকাল, বিকালে নিজের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাকে একজোট করে লিখে চলেছেন বাম নেতা। রাজ্যের বাইরে শহর শিলিগুড়ির জন্য তাঁর ভাবনা, কাজের ক্ষেত্রকে বইটিতে রাখা হচ্ছে।
অশোকবাবু অবশ্য একে আত্মজীবনী মূলক লেখা বলতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘আমার তিন দশকের বেশি সময়ের একটা পথচলাকে আমি এক সুতোয় বাঁধার চেষ্টা করছি। কীভাবে তিন দশক টানা কাজ করেছি। রাজ্যের অধিকাংশ পুর আইন বা পার্বত্য পরিষদের আইন তৈরিতে কী ভূমিকা নিয়েছি, সব খোলামেলা ভাবে থাকবে। নানা অজানা কথা বইটা প্রকাশ হলে অনেকে জানতে পারবেন।’’
দলের নেতারা জানান, ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতা পরিবর্তনের আগে অবধি অশোকবাবু পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন। সেই সময়কার মুখ্যমন্ত্রী বু্দ্ধদেব ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ট হওয়ায় দলের অন্দরে বলা হত, তিনি সব সময় অন্যদের থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকতেন। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে অশোকবাবুর ঘনিষ্টতা সবাই জানতেন। কেন্দ্রের থেকে উড়ালপুল থেকে সেতু নানা প্রকল্পের টাকা তিনি রাজ্যে এনেছেন। আবার তৃণমূলকে ঠেকাতে শিলিগুড়ি মডেলের জনক অশোকবাবুর কথা রাজ্যের বামকর্মীদের উজ্জীবিত করেছিল। সব কিছু তাঁর কাজের ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করেছে। অশোকবাবুর কথায়, বিভিন্ন সময়ে লেখালেখি করি। কয়েকটা বই আছে। এটা সম্পূর্ণ অন্য রকম একটা ভাবনার লেখা।