প্রতীকী ছবি
প্রার্থী বাছাইয়ে যেন সিঁদুরে মেঘ দেখছে কোচবিহার জেলা সিপিএম। তাই পুরভোটে প্রার্থী বাছাইয়ে ‘বিক্রি হবেন না’, এমন কমরেডদেরই টিকিট দিতে চাইছে তারা। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে তালিকা চূড়ান্ত করার আগে এলাকার পুরনো কমরেডদের কাছ থেকে সম্ভাব্যদের ব্যাপারে ‘রিপোর্ট’ও নেওয়া হবে। দলের প্রতি আনুগত্য যাচাই করেই দেওয়া হবে টিকিট।
দলীয় স্তরে ওই মনোভাবের কথা ইতিমধ্যে জেলা নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন। সেইমতো খোঁজও চলছে। তবে আগ্রহীদের কাছ থেকে বায়োডাটাও নেওয়া হবে। টিকিটের ‘শিকে ছিঁড়বে’ অবশ্য এইসব দেখেই।
দলীয় সূত্রে খবর, জেলার ছ’টি পুরসভায় এবার একযোগে মঞ্চ গড়ে ভোটে লড়বে বাম-কংগ্রেস। কোচবিহার, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি পুরসভার মোট ৮০টি আসনের মধ্যে বামেরা লড়বে ৬০টিতে। তার মধ্যে সিপিএম প্রার্থী দিচ্ছে ৩৫টি ওয়ার্ডে। সংরক্ষণের গেরোয় কোচবিহার পুরসভার বিরোধী দলনেতা-সহ একাধিক পুরনো কাউন্সিলর নিজেদের ওয়ার্ডে লড়তে পারছেন না। এছাড়া, তরুণ প্রজন্মকে টানার ভাবনাও রয়েছে। ফলে বেশ কিছু আসনে নতুন মুখ আনতে হচ্ছে। সব মিলিয়েই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে গিয়ে বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে দলের টিকিটে জেতার পর যাতে তিনি অন্য শিবিরের কাছে ‘বিক্রি’ না হয়ে যান, সেটাকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
দলের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “ভোটের দিন ঘোষণার দু’ঘণ্টার মধ্যে আমরা তালিকা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কোনও অবস্থাতেই জিতে কেউ বিক্রি হবেন না সেটাও দেখা হচ্ছে।”
দলীয় সূত্রে খবর, প্রার্থী কতদিন দলের সঙ্গে যুক্ত, বামপন্থায় তাঁর বিশ্বাস, আনুগত্য কেমন রয়েছে সেসব নিয়ে পুরনো কমরেডদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হবে। রিপোর্ট ইতিবাচক হলে চূড়ান্ত তালিকার জন্য নাম বিবেচনা হবে।
দলের এক নেতার কথায়, ‘‘দলের টিকিটে লড়াই করে গত পুরভোটে জিতে জেলার একাধিক কাউন্সিলর শিবির বদল করেন। তাই সতর্কতা।’’
কিন্তু সবকিছু যাচাই করে দেখার পরেও যদি ‘শিবির বদলের’ ঘটনা ঘটে? সিপিএমের ওই নেতার কথায়, ‘‘আমরা তো জ্যোতিষী নই। কিন্তু আনুগত্যের ‘রেকর্ড’ ভাল হলে সেই সম্ভাবনা থাকবে না বলেই বিশ্বাস।’’ সিপিএমের অভিযোগ, ভয়, প্রলোভন, মিথ্যে মামলার মত নানা ছক করে ‘দুর্বল’দের শিবির বদলানোর চেষ্টা হয়। দলের প্রতি অনুগত ‘কমরেড’ হলে ওসবে মাথা নোয়াবেন না।
কথায় বলে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর! সিপিএমের এখন বিশ্বাসেই বড় ভরসা!