Ashok Bhattacharya

সুবিধা পাক উত্তরবঙ্গ, দাবি অশোকের

বিজেপি তা পূরণ করতে পারেনি বলে ২০১৯ সালের লোকসভার তুলনায় এ বারে পাহাড় থেকে বিজেপির জয়ের ব্যবধান কমেছে বলে দলের অন্দরের আলোচনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ০৯:৪৭
Share:

অশোক ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রকল্পগুলির সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বলেছিলেন কেন্দ্রের শিক্ষা এবং উত্তর-পূর্ব বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তা নিয়ে বেধেছে বিতর্ক। বিজেপি-বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, ঘুরিয়ে বাংলা ভাগ করতে চাইছে বিজেপি। আবার সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো যে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পায়, তার সঙ্গে উত্তরবঙ্গকে শামিল করা হোক। এটা আমরা বহু দিন থেকেই চাইছি। এর সঙ্গে রাজ্য ভাগের বিষয় নেই।’’ সুকান্তের বক্তব্যকে সমর্থন করেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাও। শুক্রবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিজেপির যুব সভাপতি তেজস্বী সূর্যকে সঙ্গে নিয়ে রাজু এক ধাপ এগিয়ে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমস্যার (পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি এবং ১১ জনজাতির জন্য ষষ্ঠ তফসিলের স্বীকৃতি) সমাধানের কথাও জানিয়েছেন।

Advertisement

রাজুর বক্তব্য, ‘‘সুকান্ত মজুমদার মিথ্যে বলেননি। আমি এক ধাপ এগিয়েছে বলছি, বিশেষ করে, দার্জিলিং-তরাই-ডুয়ার্সের জন্য বিজেপি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করবে। তার উপরে সক্রিয় চর্চা চলছে। আমার বিশ্বাস, দার্জিলিং, তরাই, ডুয়ার্সের মানুষের লাগাতার বঞ্চনার ন্যায় মিলবে। সে ন্যায় আসবে ভারতীয় সংবিধানের মাধ্যমেই।’’

পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের আশ্বাস রাজুর মুখে নতুন নয়। বিজেপি তা পূরণ করতে পারেনি বলে ২০১৯ সালের লোকসভার তুলনায় এ বারে পাহাড় থেকে বিজেপির জয়ের ব্যবধান কমেছে বলে দলের অন্দরের আলোচনা। আবার রাজু ঘুরিয়ে বাংলা ভাগের কথাই বলতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিজেপি পরিকল্পনা করে রাজ্যে আশান্তির চেষ্টা করছে। উত্তরবঙ্গ থেকে এতগুলি আসন পেয়েও বাজেটে কিছুই নেই। তার পরেও কখনও রাজ্য-ভাগ কখনও উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার নাম করে চক্রান্ত চলছে।’’

Advertisement

যদিও বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘এর সঙ্গে রাজ্য ভাগের বিষয় নেই। সীতারাম ইয়েচুরি যখন সংসদের পর্যটন বিষয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন তখন তিনি বিষয়টি তুলেছিলেন। চিঠি দিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়িক সংগঠন ‘ফোসিন’ থেকে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে দরবার করা হয়েছে। তার সার কথা, সিকিম যেমন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আর্থিক সুবিধা পায়, সেই সুবিধা দার্জিলিং বা উত্তরবঙ্গ পাক। তা হলে, রাজ্যকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ১০ শতাংশ দিতে হবে। অনেক ছাড় মিলবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য কেন্দ্র নর্থ ইস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন পলিসিতে অনেক ‘ইনসেনটিভ’ দেয়। উত্তরবঙ্গকেও সেই সুবিধা দেওয়া হোক। তাতে সিকিমের মতো উত্তরবঙ্গে অনেক শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকে এটা বুঝতে চাইছেন না।’’ তা হলে কি তিনি সুকান্তের দাবি সমর্থন করছেন? অশোক বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার ঠিক কী বলতে চাইছেন, জানা নেই। আমরা যেটা চেয়েছিলাম, সেটা জানালাম।’’

বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘অশোকবাবুর কথায় গুরুত্ব দিতে চাই না।’’ তবে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘অশোকদারা রাজ্যভাগের বিষয় তুলে নানা সময়েই আমাদের বিরুদ্ধে সরব হন। কিন্তু এটা যে রাজ্য ভাগ নয় এবং আখেরে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন হবে তা বুঝতে পেরেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement