প্রতীকী ছবি
কোচবিহার জেলার বক্সিরহাটে পুলিশি নজরদারি কঠোর হয়েছে। সেই কারণেই কি আলিপুরদুয়ার শহরকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করতে শুরু করে করেছে গরু পাচারকারীরা? শনিবার গভীর রাতে শহরের সুভাষপল্লি এলাকা দিয়ে পাচারের সময় জনতার হাতে চারগাড়ি গরু ধরা পড়ায় এবার এই প্রশ্নই উঠেছে আলিপুরদুয়ারে।
অভিযোগ, গত প্রায় এক বছর থেকে এই শহরকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করছে গরু পাচার চক্র। যদিও জেলার পুলিশ কর্তারা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। খোদ পুলিশের একটি সূত্রের খবর, এক সময় অসমের দিকে পাচার হওয়া গরু কোচবিহারের বক্সিরহাট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হত। কিন্তু নিরাপত্তার কড়াকড়ির জন্য বেশ কয়েকবার সেখানে পাচারকারীদের ধাক্কা খেতে হয়। এরপর নতুন ‘রুট’ হিসেবে উঠে আসে আলিপুরদুয়ার শহর। পুলিশের ওই সূত্রটির মতে, বিভিন্ন রাজ্য দিয়েই পাচার হওয়া এই গরুগুলি এ রাজ্যে ঢোকে। তারপর শিলিগুড়ি হয়ে ফালাকাটা দিয়ে সোনাপুরে আসে। অভিযোগ, অনেক সময় সোনাপুরে গাড়ি বদলে অন্য গাড়িতে গরু তোলা হয়। তারপর আলিপুরদুয়ার শহর হয়ে বারবিশার উপর দিয়ে সেগুলি অসম হয়ে বাংলাদেশে চলে যায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পাচার হওয়া গরু উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যেও যায়।
অভিযোগ, মূলত রাতের অন্ধকারে আলিপুরদুয়ার শহরকে ব্যবহার করে গরু পাচারকারীরা। শহরের উপর দিয়ে নিয়মিত এই পাচার চললেও পুলিশ নিশ্চুপ বলে অভিযোগ। আলিপুরদুয়ার দিয়ে গরু পাচার বন্ধের দাবি নিয়ে দিনকয়েক আগে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সরকার জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বিপ্লবের আবার অভিযোগ, পাচারকারীরা পুলিশকে নিয়মিত মাসোহারা দিচ্ছে। আর সেই কারণে পুলিশ পাচার হওয়া গরু ছেড়ে দিচ্ছে। বারবিশা হয়ে শিমুলটাপু দিয়ে অসমে গরু পাচারের সময় পুলিশের একটি নাকা চেকিংও পড়ে। আশ্চর্যজনক ভাবে সেখানেও সেই গাড়িগুলি আটকানো হয় না।
বিভিন্ন মহলের আরও অভিযোগ, প্রায় এক বছর ধরে আলিপুরদুয়ারকে গরু পাচারের করিডর হিসাবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে পাচারকারীরা। যত দিন যাচ্ছে ততই এই ঘটনা বাড়ছে বলেও অভিযোগ বিভিন্ন মহলের। যদিও পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, বক্সিরহাট দিয়েই অসমে পাচার হওয়া গরু ঢোকে। পাচারকারীরা মাঝেমধ্যে আলিপুরদুয়ারকে ব্যবহার করে।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ারকে কোনও অবস্থাতেই গরু পাচারের করিডর বলা যায় না। তেমনটা হলে প্রতিদিনই এই জেলায় এ ধরনের গাড়ি ধরা পড়ত। কারণ, এই জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ সবসময়ই সতর্ক রয়েছে।’’