ধূপগুড়ির বাজারে বিক্রিবাটা শুধু ছোট মাছের। নিজস্ব চিত্র।
টিভি আর নেটমাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ-বিহারের নদীতে মৃতদেহ ভাসার দৃশ্য দেখেছেন অনেকেই। আর নদীর বড় বড় মাছ সেই দেহ খুবলে খাচ্ছে বলে গুজব রটেছে উত্তরবঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে ধূপগুড়ি-সহ জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীর বড় মাছের বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে। যদিও ছোট মাছ এবং পুকুরের মাছের বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে জানাচ্ছেন মাছ ব্যবসায়ীদের একাংশ।
করোনার সেই আতঙ্ক প্রভাব ফেলেছে ধূপগুড়ির মাছ বাজারে। ইতিমধ্যেই সেখানকার কয়েকজন ব্যবসায়ী মাছের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। শনিবার সকালে সেই মাছ বাজারে গিয়ে দেখা গেল ভিড়ের সেই চেনা ছবি উধাও। অনেক বড় মাছ ব্যবসায়ী দোকান গুটিয়ে ফেলেছেন। ক্রেতা নেই বলে বড় মাছ কিনছেন না। কয়েকজন জানালেন, আগের থেকে কেনা মাছগুলি বিক্রি করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। বরফে রাখার খরচও বাড়ছে। তবে এই পরিস্থিতিতে ছোট মাছের চাহিদা প্রবল। ফলে বোরোলি, ট্যাংরা, বাটা, তেলাপিয়া, সিঙ্গি, কই, চিংড়ি, ফুলবাছার মতো ছোট মাছের দামও বেড়েছে অনেকটাই। বেড়েছে চিংড়ির চাহিদাও।
ধূপগুড়ির মাছ ব্যাবসায়ী সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘বড় মাছ কেনাবেচা নেই। তাই অনেকে দোকান গুটিয়ে ফেলেছে। যাও বা বড় মাছ আগে কেনা ছিল তাও বিক্রি করতে পারছি না। কারণ, সকাল ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন।’’
ক্রেতা মনোজ রহমান বলেন, ‘‘শুনছি নদীতে নাকি করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সেই মৃতদেহ খাচ্ছে বড় মাছ। তাই আমরা বড় মাছ খাওয়া বন্ধ রেখেছি ভয়ে। নদীর ছোট মাছ খাচ্ছি। তাই দ্বিগুণ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হচ্ছে আমাদের।’’ এ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ অর্পিতা দেব বলেন, ‘‘পুকুরের মাছ আর নদীর মাছের পুষ্টিগত মানে তেমন কোনও ফারাক নেই। পুকুরে তো এমনি মাছ জন্মাবে না। নদী থেকে মাছের চারা এনে পুকুরে ছাড়া হয়। তাই গুণ একই। তবে স্থানীয় ভেড়িতে মাছ চাষ করা হলে, মানুষের তত্ত্বাবধানে। তাই সেটা হয়ত বেশি স্বাস্থ্যকর হতে পারে।’’