পাহারা: ডুয়ার্সে ভুটান সীমান্তে নজরদারি। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের জেরে ভুটানে আটকে পড়া শ্রমিকদের একাংশ সীমান্তের অরক্ষিত জঙ্গল ও পাহাড়ি এলাকা দিয়েই দেশে ঢুকে পড়ছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনার জেরে ভুটানের খোলা সীমান্তের ওইসব দুর্গম এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। ভুটান সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলিতে সচেতনতামূলক প্রচারও চালাচ্ছে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর।
জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বলেন, “ভুটান থেকে সেন্ট্রাল ডুয়ার্সের কাছে চিনচুলা এলাকায় সম্প্রতি ১৮ জন অসমের বাসিন্দা এদিকে চলে এসেছিলেন। ওঁদের পরে অসমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, মাদারিহাট ও কালচিনি এলাকায় সীমান্তের বড় একটা অংশ পাহাড়। জয়গাঁয় বেশ কিছু জায়গায় পুলিশ ও এসএসবির নজরদারি রয়েছে। পুলিশের তরফে সীমান্ত গ্রামগুলিতে প্রচার চালানো হচ্ছে। বাইরের কেউ এলে তা প্রশাসনকে জানানোর জন্য। গ্রামের লোকেরাও যথেষ্ট সচেতন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ভুটান সীমান্তে পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া কিছু যাতায়াত করছে না। ঘটনার জেরে ঘরে ফিরতে চাওয়া শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছেন। শ্রমিকদের একাংশ ঘরে ফেরার চেষ্টা খোলা সীমান্ত বেছে নিয়েছেন।
ভুটানের পাশাখা-সহ বেশ কিছু এলাকার পাশেই রয়েছে এ রাজ্যের জঙ্গল, পাহাড়, নদী। এই দুর্গম এলাকাগুলি কার্যত খোলা সীমান্ত। বেশ কিছু পয়েন্টে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের নজরদারি থাকলেও অধিকাংশ এলাকায় বেড়া নেই। ভুটান দেড়মাসের উপর আটকে থাকা শ্রমিকদের একাংশ মরিয়া ঘরে ফেরার জন্য। প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, সেই কারণেই শ্রমিকদের একাংশ খোলা সীমান্ত দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলা ও কোচবিহার জেলার প্রচুর লোক ভুটান রয়েছেন। মূলত ভুটানের থিম্পু ও পারোয় নির্মাণকাজ করতে গিয়েছিলেন ওই শ্রমিকেরা। তাঁরা এলাকায় ফিরতে চাইছেন। কিন্তু সীমান্তে যাতায়াত বন্ধ থাকায় অন্য পথে ফেরার পথ খুঁজছেন অনেক শ্রমিক। পুলিশ কর্তারা জানান, মাদারিহাটে টোটো পাড়া-সহ বিভিন্ন বনবস্তি রয়েছে ভুটান সীমান্তে। কালচিনি ব্লকেও সেন্ট্রাল ডুয়ার্স, বক্সা জঙ্গল, আদমা পাহাড়, বক্সা পাহাড় রয়েছে ভুটান সীমান্ত এলাকায়। সম্প্রতি যে ১৮ জন ভুটান থেকে কালচিনি ব্লকে এসেছিলেন তাঁরা দুর্গম জঙ্গল দিয়ে খোলা সীমান্তের সুযোগ নিয়েই এদেশে ঢুকেছিলেন।
জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুর্বণ গোস্বামী জানান, খোলা সীমান্ত উদ্বেগের কারণ। তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। মানুষ সচেতন রয়েছে।কালচিনি ব্লকের বিডিও ভূষন শেরপা জানান, এলাকায় বেশ কিছু খোলা সীমান্ত রয়েছে। সেখানে নজরদারি জন্য পুলিশ কর্তাদের জানিয়েছেন তিনি।