বাজারে ভিড়। নিজস্ব চিত্র
আর পাঁচটা বাজারের মতো এই বাজারেও মেলে আলু, পেঁয়াজ, কোয়াশের মতো আনাজ। অনেক সময় মিলছে চাল, ডাল, তেল, সয়াবিনও। স্যানিটারি প্যাডও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এই বাজারে কিছু নিতে গেলে টাকা লাগছে না। প্রয়োজন অনুযায়ী নিতে পারছেন গ্রাহকরা। বাম ছাত্র যুবদের দ্বারা পরিচালিত এই বাজারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জনগণের বাজার’।
চলতি সপ্তাহেই শিলিগুড়ি মহকুমার দুই জায়গায় এমন বাজার চালু হয়েছে। মাটিগাড়ার আঠারোখাই এলাকার শরৎপল্লিতে একটি, আর একটি শিলিগুড়ি শহরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। শিবমন্দিরের বাজারটি শরৎপল্লির খেলার মাঠে বসছে। গত তিনদিন ধরে চলছে বাজার। এলাকাবাসী এবং শুভানুধ্যায়ীদের থেকে সাহায্য পেলেই পরেরদিন বাজার বসা নিশ্চিত হচ্ছে শিবমন্দিরে। আর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাজারটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বসছে ওয়ার্ডের বিভিন্ন দিকে। মঙ্গলবার সকাল সাতটায় বাজার বসেছিল নৌকঘাট এলাকায়। আজ, বুধবার বসবে শীতলাপাড়ায়। দুই মাইল এলাকার একটি সংস্থা লকডাউনের প্রথম থেকে দুঃস্থদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করে আসছে। রোজ তাদের কাছ থেকে ১০০ জনের আনাজপাতি নিয়ে বাজার বসানো হচ্ছে তিনবাতি, জলপাইমোড় লাগোয়া এলাকাগুলোয়।
মূলত ডিওয়াইএফআই, এসএফআই কর্মীরা দলবেঁধে বাজারগুলি চালাচ্ছেন। প্রতিদিন অন্তত ১০০ জনের দু’বেলা নিরামিষ ভাত, তরকারি যাতে জোটে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে দু’টি বাজারেই। শিবমন্দির এলাকার বাম ছাত্র যুব সংগঠনের কর্মী পার্থ বসাক, সৌরভ সরকার, তন্ময় রায় বা নান্টু কুণ্ডুরা কয়েকদিন আগে এমন বাজারের পরিকল্পনা করেন। তাঁরা সাত সকালে গাড়ি নিয়ে চলে যাচ্ছেন লিউসিপোখরি হাটে। সেখান থেকে আনাজ আনা হচ্ছে। চাল, ডাল, সয়াবিন বা স্যানিটারি প্যাড জোগাড় হচ্ছে এলাকা থেকে। সকাল ১০টা থেকে বসে যাচ্ছে বাজার। চলছে ১২টা অবধি। পার্থ, নান্টু বা সৌরভেরা জানান, গাড়ি ভাড়া, আনাজ এবং জিনিসপত্র মিলিয়ে ১০ হাজার টাকা কমবেশি রোজ লাগছে। প্রতিদিন নানা স্তরের মানুষ সাহায্য করছেন।
আবার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে বাজার চলছে দু’টি উপায়ে। দুই মাইলের সংস্থার কাছ থেকে কাউন্সিলের চিঠি দেখিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বাঁধাকপি, কোয়াশ, আলু, গাজর, শসা, লঙ্কা, টোম্যাটো নেওয়া হচ্ছে। বাকি চাঁদা তুলে জোগাড় হচ্ছে। শক্তিগড়ের বাসিন্দা বামকর্মী গৌরব সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের আমাদের সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।’’
শিলিগুড়ির বিধায়ক ও মেয়র অশোক ভট্টাচার্য শিবমন্দিরের বাজার ঘুরে দেখেছে। তিনি বলেন, ‘‘সেবা করার জন্য মনের জোর লাগে। এরা যা করছেন তা প্রশংসনীয়।’’