উদ্বিগ্ন: অসুস্থ কিশোরীর মা-বাবা। নিজস্ব চিত্র
ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন সংক্রমণ বাড়ছে, তাই দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। আর এই জটিল রোগের চিকিৎসা করাতে নিয়ে যেতে হয় কোয়েম্বত্তুরে। সাধারণ পরিবারে ধার-কর্জ করে চিকিৎসার খরচ জোগাড় করলেও বর্তমান অবস্থায় কী ভাবে মেয়েকে নিয়ে সেখানে যাবেন, তা নিয়েই চিন্তায় পরিবারের সদস্যরা। আর তার উপর ট্রেন বন্ধ তাই গাড়ি ছাড়া পথ নেই। তাতে করে নিয়ে যেতে হলেও দরকার পাস, সেটাও বা মিলবে কী করে—সব মিলিয়ে সমস্যায় তাঁরা।
ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ হাইস্কুল থেকে কলা বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছেন সুইটি। ছোটবেলা থেকেই পায়ের ফিমার হাড়ে সমস্যা রয়েছে তাঁর। পরিবারের সদস্যরা জানালেন, এই রোগ বিরল এবং অনেক ছোটবেলাতেই তা ধরা পড়ে। দীর্ঘদিন ধরেই কোয়েম্বত্তুরে চিকিৎসা চলছে। এখনও হাড়ে সংক্রমণ বাড়ায় দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরাও। পরিবারের সদস্যরা জানালেন, আট বছরের মধ্যে অস্ত্রোপচার হয়েছে দু’বার। ফের সমস্যা বেড়েছে। চিকিৎসকের কাছে নামও লেখানো হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে কী ভাবে মেয়েকে নিয়ে যাবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। একেই ট্রেন বন্ধ, আর গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যাওয়াটাও প্রচুর ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবু চেষ্টা করছেন তাঁরা। টাকা যদিও বা জোগাড় হয়, কী ভাবে ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার পাস মিলবে, তা নিয়েই রাতের ঘুম ছুটেছে তাঁদের।
তাঁরা জানালেন, এরই মধ্যে পুলিশ সুপার দফতর, ইসলামপুরের পুরসভার চেয়ারম্যান—প্রত্যেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু তবু কাটছে না চিন্তা।
ওই ছাত্রীর বাবা গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘নিজস্ব গাড়ি নেই। গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনও উপায়ও নেই। সে ক্ষেত্রে প্রচুর টাকা লাগবে। ধার করে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করছি। আর সেটা যদিও হয় তবু যেতে পারব তারও তো নিশ্চয়তা নেই। যে কোনও জায়গায় আমাদের গাড়ি আটকে দেওয়া হতে পারে। তাই প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’’
ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘ওঁদের বলা হয়েছে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে। সে ক্ষেত্রে গাড়ির নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলে গাড়ির পাস পাওয়া যাবে।’’