প্রতীকী ছবি।
করোনার ধাক্কায় টালমাটাল অর্থনীতির জন্য ধাপে ধাপে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু সেই প্যাকেজের কোথাও নাম নেই পর্যটন শিল্পের। অথচ দেশের জিডিপির ৯.২ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানের দিক থেকে জনসংখ্যার ৮.১ শতাংশ এখন পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। দেশের বণিকসভাগুলি সমীক্ষার পর জানিয়েছে, এই শিল্পের উপর জডিত কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারেন। আর বছর মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বে পর্যটন শিল্প। তাই একে টেনে তোলার জন্য সরকারের কাছে জমা পড়েছিল একাধিক প্রস্তাব।
শিল্পের সঙ্গে জড়িতের বক্তব্য, আলাদা করে এক টাকাও ঘোষণা হয়নি। উল্টে, কিছু প্রশ্ন অর্থমন্ত্রী 'ঠিক হ্যায়' বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। তাই এ বার উত্তরবঙ্গ, সিকিম, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যটন ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর দফতর, পর্যটনমন্ত্রক, নির্মলা সীতারামন, অনুরাগ শ্রীবাস্তব, রাজ্যের পর্যটন দফতরের প্রতি বার্তা দিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু করলেন প্রচার, সই সংগ্রহ অভিযান। যার নাম – ‘#ঠিক নেহি হ্যায়-সেভ ইন্ডিয়ান ট্যুরিজম’। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ট্যুইটারের মতো বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে রবিবার রাত থেকে এই পিটিশন নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। উত্তরের পর্যটন সংগঠন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের তৈরি ওই পিটিশনে সোমবার বিকাল অবধি ৩৪৭ জন স্বাক্ষর করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই আবেদনপত্রে সরকারের কাছে কতগুলি দাবি রাখা হয়েছে। সরাসরি আর্থিক সাহায্য, সহজ শর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ব্যবস্থা, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে নানাভাবে জড়িত কর্মীদের সাহায্যের দাবি জানানো হয়েছে। জিএসটি-সহ বিভিন্ন করছাড় এবং পর্যটনের খরচকে ভবিষ্যতে আয়কর ছাড়ের হিসাবের মধ্যে রাখার দাবিও তোলা হয়েছে।
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘রাজ্য সরকারগুলি পর্যটন শিল্পের ক্ষেত্রে সহায়কের ভূমিকা নেয়। বেসরকারি ক্ষেত্রই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যেটা করে গেলেন সেটা সবটাই ভাঁওতাবাজি। পর্যটনের মত বিভিন্ন শিল্প, সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর প্রয়াস বোঝাই গেল না।’’ উত্তরবঙ্গ, সিকিমের পর্যটনে এখন গরমের মরসুমে প্রতিদিন ১৯ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। পিটিশন তৈরি করা পর্যটন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানান, ‘‘করোনা লড়াই হচ্ছে। আগামীতেও হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু আমাদের কথা বলা হচ্ছে না। এ ভাবে তো পর্যটন শিল্পের কয়েক কোটি মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলার শামিল।’’