প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ। পড়াশোনার অভ্যেস বজায় রাখতে কোথাও অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে, কোথাও আবার টিভিতে নেওয়া হচ্ছে ক্লাস। কিন্তু শিলিগুড়ি মহকুমায় এমন অনেক পড়ুয়া রয়েছে যাদের কারও বাড়িতে টিভি নেই, নেই স্মার্টফোনও। কোথাও আবার ইন্টারনেটের সমস্যা রয়েছে। যার ফলে ক্লাসের সুবিধে থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রচুর পড়ুয়া। কবে থেকে স্কুল শুরু হবে তারই অপেক্ষা করছে তারা।
শিলিগুড়ির ডিআই রাজীব প্রামাণিক জানান, মহকুমায় উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক মিল মোট ৭৮টি স্কুল রয়েছে। প্রত্যেকটি স্কুলে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। গ্রামের পড়ুয়াদের অনেকে তাতে অংশ নিচ্ছে। যাদের স্মার্টফোন, টিভি কিছুই নেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন শিক্ষকরা। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দুঃস্থ পড়ুয়া রয়েছে। অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। যাদের লকডাউনে খাবারের সমস্যায় পড়েছে তারা ক্লাস করবে কী ভাবে। স্কুল খুললে তাদের ক্লাসের ব্যবস্থা করে পড়ানো হবে।’’
লকডাউনে স্কুলগুলির ক্লাসের ধরন বদলেছে। রাজ্য সরকার নিজস্ব পোর্টালে এবং টিভিতে ক্লাসের বিশেষ ব্যবস্থা করেছে। সরকারি-বেসরকারি অনেক স্কুলেই চালু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। অনেক স্কুলে আবার হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে পড়ানো হচ্ছে। যদিও অনেকেই এই সুবিধে নিতে পাচ্ছে না। ফাঁসিদেওয়া হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্র জানান, বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় তাদের বাড়ি। বাড়িতে টিভি বা স্মার্টফোন কিছুই নেই। ফলে ক্লাসও করতে পারছে না সে। দীর্ঘ দিন পড়াশোনার মধ্যে থাকলে অভ্যেস চলে যাবে বলে মনে করছ অনেক পড়ুয়ারাই। রানিডাঙ্গা কালামার স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তপু রায়। অনলাইন ক্লাস করতে না পেরে সমস্যায় পড়েছে বলে সে জানায়। তপু বলে, ‘‘অনেক বিষয় নিজে পড়ে বোঝা সম্ভব হয় না। তাতে অনেকটা পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে।’’
খড়িবাড়ি ব্লকের হাতিঘিসা নেপালসীমান্ত সংলগ্ন। হাতিঘিসা হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, তার স্মার্টফোন থাকলেও ইন্টারনেট সংযোগ খুব খারাপ। ফলে অনলাইন ক্লাসের সুবিধা নিতে পাচ্ছে না। একই অবস্থা নকশালবাড়ি নন্দপ্রসাদ হাইস্কুলের ছাত্র ভূপেন ওরাওঁয়ের। বিহার সীমানা লাগোয়া চা বাগান এলাকায় তার বাড়ি। লকডাউনে সেই এলাকার মানুষ খাবারের সমস্যায় পড়েছেন। একই অবস্থা ভূপেনের পরিবারেও। ভূপেন বলে, ‘‘খাবারের টানে ছুটতে হচ্ছে। পড়বো কখন?’