প্রতীকী ছবি
লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গকারীদের ধরে ঘরে পাঠাতে নাজেহাল পুলিশ। এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ত্রাণ এবং খাবার বিলি করা নিয়ে সামাজিক দূরত্বের বিধি উড়িয়ে দেওয়ার সমস্যা। যা নিয়ে এবার কড়াকড়ির পথে হাঁটতে চায় শিলিগুড়ি পুলিশ।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি বিভিন্ন সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাবারের প্যাকেট বা ত্রাণ বিলি হচ্ছে। ছোট গাড়ি বা অটো এলাকায় গিয়ে দাঁড়ালেই খাবার নেওয়ার জন্য লাইন পড়ে যাচ্ছে। কোথাও অফিস বা গুদাম থেকে বিলি হচ্ছে সাহায্য। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শুরু করে লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও চলছে এই সামাজিক সেবা। শহরবাসী সাধুবাদ জানাচ্ছেন। তবে এই ত্রাণ বা খাবার বিলির ক্ষেত্রে অধিকাংশ জায়গায় সামজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে সরবরাহকারীদের সকলের মাক্স, গ্লাভস পরার বিষয়টি নিয়েও। সোশ্যাল মিডিয়ায় রোজ ভরে থাকছে এমন ছবি, ভিডিয়ো।
এ বার এগিয়ে এল শিলিগুড়ি পুলিশ। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের কর্মসূচি নিতে হলে কঠোরভাবে সামজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে। আপাতত সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে। বিকল্প হিসেবে পুলিশ বলছে, নিজেরা ত্রাণ বিলিবণ্টন না করে পুলিশের ‘ফুড রিলিফ সেল’-জমা দিন। পুলিশ তা এলাকায় এলাকায় পৌঁছে দেবে।
কমিশনারেটের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, লকডাউনের প্রথম থেকে ফুড রিলিফ সেল সারা শহরে কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো কেউ যাতে অভুক্ত না থাকেন, তা রাত অবধি থানা ধরে ধরে খেয়াল রাখা হচ্ছে। খোলা হয়েছে ফুড কন্ট্রোল রুম। সেখানে খাবারের সমস্যা হলে টেলিফোন করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ৪ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ৫০০ গ্রাম সরষের তেল, ২৫০ গ্রাম সয়াবিন, ৫০০ গ্রাম লবণ, ২টি সাবান মিলিয়ে প্যাকেট তৈরি করে বিলি হচ্ছে। খাবার প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে ফুটপাতবাসী, ভিখারি, ভবঘুরেদেরও।
দু’দিন আগের ঘটনা। শিলিগুড়ির দক্ষিণ প্রান্তে এক ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিজের অফিস থেকে ত্রাণ বিলি শুরু করেন। আধ ঘণ্টার মধ্যে লাইন পড়ে যায়। অভিযোগ, সেখানে কোনও রকম সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকে বলেছেন, ‘‘আবার একই ভাবে কর্মসূচি হলে বাধা দেওয়া হবে।’’
শুধু ওই কাউন্সিলর নন, রোজই একাধিক সংস্থা, ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবীরা খাবার বিলি করছেন। পুলিশ অফিসারেরা বলছেন, ‘‘শহরের মানবিক মুখ ফুটে উঠেছে। খুব ভাল। শুধু একটু সচেতনতা দরকার।’’ বিশিষ্ট চিকিৎসক প্রেম দোরজি ভুটিয়া বলেন, ‘‘আমরা এলাকার ১-২ জনকে ডেকে ত্রাণ দিচ্ছি। পরে বাড়ি বাড়ি তাঁরা তা বিলি করে দিচ্ছেন। পুলিশের মাধ্যমে এটা হলেই সবচেয়ে ভাল।’’