প্রতীকী ছবি
লকডাউনের মধ্যেও শর্ত মেনে বাস চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কিন্তু সেই শর্ত মানতে গেলে ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনের তরফে। কিন্তু ভাড়া বাড়িয়ে বেসরকারি বাস চালানোর ব্যাপারে মালিকপক্ষ এবং সরকারের মধ্যে সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী পরিষ্কার করে দিয়েছেন, বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়ানো যাবে না। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব মেনে যাত্রী তুললে বেশি ভাড়া না নিয়ে বাস চালাবেন না বলে জানাচ্ছেন উত্তরবঙ্গের বাস মালিকদের সংগঠনগুলি।
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির উত্তরবঙ্গের সম্পাদক প্রণব মানি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম তলানিতে ঠেকেছে। কেন্দ্র-রাজ্য মিলে কেন ডিজেলের দাম কমিয়ে দিচ্ছে না? রাজ্য যে শর্ত বেঁধে দিচ্ছে তা মেনে বাস চালানো সম্ভব নয়।’’ সরকারি বাসের ভাড়া বাড়ানো হবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে বাস চালানোর অনুমতি দিলেও সরকারি বাস ছেড়ে বেশি ভাড়া দিয়ে কেউ বেসরকারি বাসে চাপবে না বলে মনে করছেন মালিকরা। তা ছাড়া, ভাড়া না বাড়ালে কম যাত্রী নিয়ে বাস চালিয়ে খরচই উঠবে না বলে জানাচ্ছেন বেসরকারি বাস মালিকরা। জেলার মধ্যে গ্রিন জ়োন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাস চালানোর অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু শিলিগুড়ি থেকে পানিট্যাঙ্কি, বাতাসি, খড়িবাড়ি, বিধাননগর এবং বাগডোগরার মতো গন্তব্যগুলিতে বাস যাতায়াত করছে না। স্থানীয় বেসরকারি বাস মালিকদের দাবি, তাঁদের পুঁজি অনেক কম। কম যাত্রী নিয়ে বাস চালালে আয় তো দূর, খরচই উঠবে না। বাগডোগরা বাস ও মিনিবাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ভোলা রায় বলেন, ‘‘সরকারি বাস যখন ভর্তুকি দিয়ে চলছে, তখন আমাদের মতো বাসমালিকরা কী দোষ করল? আমাদেরও সেই পরিকল্পনার মধ্যে আনা হোক। শ্রমিকরা খেয়ে বাঁচুক।’’
আন্তঃজেলা বাস চলাচলের অনুমোদন এখনও মেলেনি। ফলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মধ্যে বাস চলছে না। শিলিগুড়ি থেকে দক্ষিণবঙ্গ বা কলকাতার দিকেও কোনও বাস চলাচল করছে না। তবে আটকে পড়া বাসিন্দাদের জন্য সরকারি উদ্যোগে কিছু বাস ব্যবহার করা হচ্ছে। আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবাও স্বাভাবিক হয়নি। শিলিগুড়ি থেকে বিহার, মেঘালয়, অসম, ঝাড়খণ্ডে যাতায়াত করে বেশ কিছু বাস। বাস মালিক তথা তৃণমূল নেতা প্রবীর দত্ত বলেন, ‘‘ভাড়া না বাড়িয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। ভ্রমণ পাসের নিয়ম শিথিল না করলে কোনওভাবেই যাত্রী আসবে না।’’
পরিবহণ মালিকদের দাবি, উত্তরবঙ্গে সব মিলিয়ে বেসরকারি বাস পরিষেবার উপরে নির্ভরশীল ৪০ হাজারেরও বেশি পরিবার। দীর্ঘ দিন বাস না চালানোর ফলে যেমন তাঁরা দুর্ভোগে পড়েছেন, তেমনিই বসে যাচ্ছে কল-কব্জা। পরিষেবা চালু করতে গেলে একটি বাস্তবসম্মত মডেলের দাবি তুলছেন বাস মালিকরা।