বার্লা। ফাইল চিত্র।
লকডাউন বিধি অমান্য করার অভিযোগে বিজেপি সাংসদ জন বার্লার বিরুদ্ধে বীরপাড়া থানায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। পুলিশের নির্দেশ অমান্য করায় আলিপুরদুয়ারের সাংসদের গাড়িচালকের বিরুদ্ধেও ওই থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তবে সাংসদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকাল থেকে জলপাইগুড়ির বানারহাট থানার লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে নিজের বাড়িতে তাকে কার্যত গৃহবন্দি করে রেখেছে পুলিশ। এই নিয়ে দুই জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে দিল্লিতে বিভিন্ন মহলে নিজের ক্ষোভের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
জন বার্লার সঙ্গে পুলিশের সংঘাতের শুরু দু’দিন আগে, রবিবার। ওইদিন বীরপাড়ার বন্ধ বান্দাপানি চা বাগানের শ্রমিকদের ত্রাণ দিতে যাচ্ছিলেন সাংসদ। কিন্তু প্রশাসনের থেকে অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগে রেতির জঙ্গলে ত্রাণের গাড়ি ও সাংসদকে আটকে দেয় পুলিশ। ফলে পিছু হটতে বাধ্য হন সাংসদ। বিজেপির অভিযোগ, সোমবার বান্দাপানি চা বাগানের কয়েকজন শ্রমিক নিজেরাই সাংসদের বাড়িতে গিয়ে একটি গাড়িতে করে সেই ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বাগানের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু রাস্তায় পুলিশ তা আটকে দিয়ে গাড়িটি বীরপাড়া থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সাংসদ বীরপাড়া থানায় গেলেও পুলিশ ত্রাণ বোঝাই গাড়িটিকে বান্দাপানি বাগানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ।
এরই মধ্যে সাংসদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা দায়ের ও তাঁকে গৃহবন্দি করার অভিযোগে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করেছে। যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, বিনা অনুমতিতে ত্রাণ দেওয়ার নাম করে বারবার লকডাউন অমান্য করায় সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। সেইসঙ্গে পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগে সাংসদের গাড়ির চালকের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।
সাংসদের অভিযোগ, ‘‘আমি যেহেতু বিজেপি করি, তাই আমার সঙ্গে রাজনীতি হচ্ছে। সেজন্যই পুলিশ প্রথমে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। তারপর আমাকে গৃহবন্দি করে রেখেছে। বাড়ির বাইরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মানুষ সব দেখছে। আমি দিল্লিতে গোটা বিষয়টি জানিয়েছি।’’ জানা গিয়েছে, এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল সরকারের নির্দেশেই পুলিশ আমাদের সাংসদের সঙ্গে এমন আচরণ করছে। দলকেও গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ যদিও তৃণমূল নেতা মোহন শর্মা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যেখানে সবাইকে লকডাউন মানার কথা বলছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের শাসক দলের সাংসদের সেটা অবশ্যই মানা উচিত। আর কেউ যদি তা না মানেন, তবে আইন তো আইনের পথেই চলবে।’’
উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’