সুভাষ রায়(গ্যারাজ কর্মী) , জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাসিন্দা
মার্চে যখন লকডাউন প্রথম শুরু হয়, তখন থেকেই গ্যারাজ বন্ধ করে গিয়েছি। কবে গ্যারাজ খুলতে পারব জানি না। বাড়িতে কিছু খাদ্য সামগ্রী মজুত করে রেখেছিলাম। তাতেও টান পড়েছে। রোজগার বন্ধ থাকায় আর্থিক সমস্যায় পড়েছি। আমার স্ত্রী জয়া রায়, দুই ছেলে ববি ও সঞ্জু-কে নিয়ে আমার পরিবার। পরিবারে আমি একাই রোজগেরে। গ্যারাজের আয় দিয়েই কোনওরকমে সংসার চলে। এদিকে লকডাউন ঘোষণা হতেই ঘরবন্দি হয়ে রয়েছি। বাড়ি থেকে প্রায় ছ’কিমি দূরে জলপাইগুড়ি শহরে বড় পোস্ট অফিস মোড়ে আমার গ্যারাজ রয়েছে। ফুটপাতের এককোণে রয়েছে আমার ছোট গ্যারাজটি। গ্যারাজ বন্ধ থাকায় আর কতদিন সংসার টানতে পারবো জানা নেই। শুনেছি রেশন থেকে ছ’মাস নিখরচায় খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ডিজিটাল রেশন কার্ড আমি ও আমার স্ত্রী হাতে পায়নি। দুই ছেলের রেশন কার্ডে সামান্য খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছি। একাধিক বার আমার স্ত্রী ও আমার ডিজিটাল রেশন কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও রেশন কার্ড হয়নি। প্রায় কুড়ি দিন হতে চলছে লকডাউন। ভেবেছিলাম বিকল্প ব্যবসা করে কিছু আয় করব। কিন্তু টাকা না থাকায় সেই উপায়ও নেই। শনিবার বাজার করতে এসে আমার গ্যারাজের সামনে এসেছিলাম। আশেপাশের সব দোকান বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরে এসেছি। ঘরে থাকতে ইচ্ছে না করলেও সরকারের নির্দেশে বাড়িতে থাকছি। সকালে খবর কাগজ পড়ে কিছুটা সময় কাটাচ্ছি। এরপর বাড়িঘরের কাজ করে টিভিতে খবর দেখছি। সন্ধ্যায় সময় টেলিভিশনে বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ও করোনা ভাইরাসের খবর দেখে সময় যাচ্ছে। দুই ছেলে কলেজ পাশ করেছে। ওরা এখনও কোনও কাজ পায়নি। তাই দু’জন সারাদিন বাড়িতে থাকছে। এরকম পরিস্থিতি আগে কোনওদিন হয়নি। এখনও কারও সাহায্য পাইনি। কবে পরিস্থিতি ঠিক সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছি।