আমার পুজো
Poverty

নাতি-নাতনিকেও নতুন জামা দিতে পারব না

নমি মণ্ডল, ফুল বিক্রেতা রথবাড়ি বাজার, মালদহ সংসারের মূলভার আমার কাঁধেই। স্বামীর বয়স হয়েছে, তবুও ব্যবসায় আমাকে সাহায্য করেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৪
Share:

স্বামী, তিন ছেলে, দুই বৌমা ও পাঁচ নাতি-নাতনিকে নিয়ে সংসার নমির।

সেই যে লকডাউনে বেচাকেনায় মন্দা শুরু হয়েছে। দেখতে দেখতে ছ’মাস পেরিয়ে গেল। কিন্তু লকডাউনের জের কিছুতেই কাটছে না বাজার থেকে। কিন্তু ফুল বিক্রির যা পরিস্থিতি, তাতে এখন নিজেদের তো দূরের কথা নাতি-নাতনিদেরও দুর্গাপুজোয় নতুন পোশাক কিনে দিতে পারব কিনা জানি না। ‘আগামীবার ‘মা’ যদি মুখ তুলে চান, পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক হয়, অবশ্যই তোদের জামাকাপড় দেব।’ এটা বলতে কষ্ট হবে, কিন্তু উপায় নেই।

Advertisement

স্বামী, তিন ছেলে, দুই বৌমা ও পাঁচ নাতি-নাতনিকে নিয়ে সংসার। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। থাকি ইংরেজবাজার শহরের সুকান্তপল্লিতে। ছেলেরা কেউ আনাজ বিক্রি করে, কেউ টোটো চালায়। কিন্তু সংসারের মূলভার আমার কাঁধেই। স্বামীর বয়স হয়েছে, তবুও ব্যবসায় আমাকে সাহায্য করেন। রানাঘাট, জিয়াগঞ্জ, আজিমগঞ্জ, কলকাতা ও রায়গঞ্জ থেকে পাইকারি ফুল ব্যবসায়ীরা এখানেই ফুল নিয়ে এসে বিক্রি করেন আমাদের। প্রশাসন বা পুরসভা কারওরই আমাদের নিয়ে মাথাব্যথা নেই, তাই খোলা আকাশের নীচেই হাইড্রেনের স্ল্যাবের উপর বসে ২৫ বছর ধরে রথবাড়ি মোড়ে ফুল বিক্রি করি। এমন দুরবস্থা কোনও দিন দেখিনি। বাস, ট্রেন বন্ধ থাকায় ফুল পেতেও সমস্যা হয়েছে। বাজারে খদ্দেরও তো থাকত না! ফলে অনেক ফুল বিক্রি না হওয়ায় পচে গিয়েছে। ভেবেছিলাম, পয়লা বৈশাখে বাজার কিছুটা হলেও উঠবে। বিশ্বকর্মা পুজোতেও বাজার পেলাম না। এখন দুর্গা পুজোর দিকে তাকিয়ে, এই ছ’মাসের ক্ষতি যদি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement