যাযাবর বসতি। নিজস্ব চিত্র
এক সময় সাপের খেলা, তাবিজ-কবজ বিক্রি করে দিনযাপন করতেন তাঁরা। প্রশাসনিক নির্দেশে সাপ-খেলা দেখানো বন্ধ হলেও পেশা পাল্টেছে। কিন্ত বদলায়নি তাঁদের জীবনের গতি। এখনও খোলা মাঠ, নদীর চর বা রেললাইনের ধারে তাঁবুই তাঁদের আশ্রয়।
এমনই কয়েকটি যাযাবর ও বেদে পরিবার এখন থাকে চাকুলিয়ার রামপুরে রেললাইনের পাশে, ডালখোলায় বুড়ি মহানন্দার চরে, কিসানগঞ্জ বা পাঞ্জিপাড়া স্টেশনের পাশের তাঁবুতে। পুরুষরা যান দিনমজুরি করতে। বিকেলে ফেরেন তাঁবুতে।
করোনা-রুখতে লকডাউনে সে সব পরিবার পড়েছে সঙ্কটে। কাজ হারিয়ে তাঁরা কার্যত এখন নিঃস্ব। কী ভাবে দু’বেলা খাবার জুটবে, সেই চিন্তায় পড়েছেন সকলে। রেশন কার্ড না থাকায় অনেকেই পাচ্ছেন না সরকারি খাদ্যসামগ্রী। পড়শি এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে সামান্য কিছু সাহায্য মিলেছিল। সে সব এখন শেষ। অভিযোগ, পেটের টানে কচুপাতা সেদ্ধ করে খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন সে সব বসতির বেদেরা।
রামপুরে বেদে বসতিতে শ’খানেক পরিবারের বসবাস। সেখানকার বাসিন্দা জগনাথ যোগী, প্রাণেশ যোগী, ঋত্বিক যোগী জানান, কেউ মৌচাক সংগ্রহ করেন, কেউ বিক্রি করেন তাবিজ, কবিরাজি ওষুধ। অনেকে করেন দিনমজুরি। লকডাউনে সব কাজ বন্ধ হওয়ায় সকলেই পড়েছেন সঙ্কটে। মজুত থাকা খাবার শেষ। হাতে নেই টাকাও। তা-ই কচুপাতা সেদ্ধ আর ভাতের ফেনেই ভরছে পেট।
গোয়ালপোখর ২ ব্লকের বিডিও কানাইয়াকুমার রায় এ নিয়ে বলেন, ‘‘ওই সব পরিবারের কাছে সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পঞ্চায়েতকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ ডালখোলা পুরসভার যুগ্ম-প্রশাসক সুভাষ গোস্বামী বলেন, ‘‘যাযাবর পরিবারগুলি যাতে সমস্যায় না পড়েন সে দিকে নজর রাখা হয়েছে।’’