অসহায়: মেয়ের সঙ্গে ঘরে উম্মে কুলসুম। নিজস্ব চিত্র
স্বামী ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। লকডাউনে এখন আটকে মুম্বইয়ে। প্রতি মাসে মুম্বই থেকে টাকা পাঠান। তবে তাতে সংসার চলে না। তাই বিড়ি বাঁধতে হয় উম্মে কুলসুমকে। লকডাউনের জেরে কাজ না থাকায় এ মাসে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারেননি তাঁর স্বামী রিণ্টু শেখ। ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলে উম্মে জেনেছেন, রিণ্টুরই এখন কপর্দকশূন্য অবস্থা। খাবার জুটছে না। টাকা পাঠাবেন কি করে!
এ দিকে যে বিড়ি বেঁধে সংসারের হাল সামাল দিতেন ওই তরুণী, লকডাউনের পর থেকে সেই কাজও বন্ধ। তাতে প্রবল অনটনে পড়েছেন মোজমপুরের মসজিদপাড়ার উম্মে কুলসুম। দুই সন্তান ও দৃষ্টিশক্তিহীন বাবাকে নিয়ে কী করে দু’বেলা খাবার জোটাবেন, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না।
একই ছবি এখন কালিয়াচকের তিনটি ব্লকের মহিলা বিড়ি শ্রমিকদের ঘরে ঘরে। উম্মে বলেন, ‘‘স্বামী প্রতি মাসে টাকা পাঠান। কিন্তু তাতে সংসার চলে না। তাই আমাকে বিড়ি বাঁধতে হয়। কিন্তু এ মাসে স্বামীও টাকা পাঠাতে পারেননি। বিড়ি বেঁধে যে সংসার চালাব, লকডাউনে সেই কাজও বন্ধ। কী করে যে দু’বেলা খাবার মিলবে ভেবে পাচ্ছি না।’’
একই পরিস্থিতি কালিয়াচক ১, ২ ও ৩ ব্লকের হাজার হাজার মহিলা বিড়ি শ্রমিকদের ঘরে ঘরে। যাঁদের মধ্যে কেউ বিড়ি বেঁধেই সংসার চালান, কেউ সংসারে অতিরিক্ত খরচ জোগাড়ে বিড়ি বাঁধেন। ওই মহিলা বিড়ি শ্রমিকেরা জানান, দিনে ১ হাজার বিড়ি বাঁধলে ১৫০ টাকা মজুরি মেলে।
কালিয়াচক মোজমপুর মসজিদপাড়ার বিড়িশ্রমিক পিঙ্কি খাতুন, সাবিনা বিবি বলেন, ‘‘বিনামূল্যে রেশন না পেলে হয়তো না খেয়ে মরতে হত।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিড়ি শ্রমিকদের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)