Coronavirus

টাকা শোধ দেব কী ভাবে?

শামুকতলার শেফালি বর্মণ এক সময় পরিচারিকার কাজ করতেন। তাতে সংসার চলে না বলে মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে বাড়ি বাড়ি কাপড় বিক্রি শুরু করেন।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী ও রাজু সাহা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি

গতবার পুজোর বাজারটা একেবারেই খারাপ গিয়েছিল শামুকতলার বেতপট্টির বাসিন্দা সুনীল শিকদারের। চা বাগানের বিভিন্ন হাটে টিপের পাতা থেকে শুরু করে প্রসাধনী জিনিস বিক্রি করে সংসার চলে তাঁর। সারা বছর টুকটাক বিক্রিবাটা হলেও উত্সবের ব্যবসার উপরেই তাঁর সংসারের ভাল থাকা নির্ভর করে। কিন্তু গতবারের পুজো, একের পর এক উত্সবে ব্যবসায় ব্যাপক মার খাওয়ার দাগ এখনও তাঁর সংসারে দগদগ করছে। তাই সেই লোকসান মেটাতে এবারের চৈত্র সেলই ছিল সুরেশের আশার আলো। শেষে সেই আশাও ত্যাগ করেছেন তিনি।

Advertisement

সুরেশের কথায়, “এ ভাবে টানা লকডাউন হবে, যাবতীয় ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে সেটা কল্পনাতেও ভাবিনি। ফলে চৈত্র সেলে একটু লাভের আশায় মহাজনের থেকে টাকা ধার করে প্রসাধনীর জিনিস কিনেছিলাম। বিক্রি করা তো দূরের কথা, বাড়ি থেকে বেরোতেই পারলাম না। ক্ষতি তো যা হওয়ার হল। এখন কীভাবে মহাজনকে টাকা ফেরাব তা বুঝতে পারছি না।”

শামুকতলার শেফালি বর্মণ এক সময় পরিচারিকার কাজ করতেন। তাতে সংসার চলে না বলে মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে বাড়ি বাড়ি কাপড় বিক্রি শুরু করেন। তাঁর কথায়, “খুব আশা ছিল, এবার চৈত্র সেলে একটু বিক্রিবাটা হবে। কিন্তু করোনাভাইরাস সব শেষ করে দিল। মহাজনের কাছ থেকে প্রচুর টাকা ধার করেছি। মেটাব কী করে, বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

লকডাউনের জেরে আলিপুরদুয়ারে চৈত্র সেলের বাজার কার্যত মাটি হয়ে গিয়েছে। আচমকা লকডাউন শুরু হওয়ায় বরাত দেওয়া প্রচুর জামা-কাপড় বোঝাই লরি বা ট্রাক মাঝরাস্তায় কোথাও আটকে পড়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীদের একাংশের কথায়, যাঁরা সামান্য পুঁজিতে ব্যবসা করেন, সমস্যা হবে তাঁদেরই।

আলিপুরদুয়ার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক প্রসেনজিত দে বলেন, “অপেক্ষাকৃত ছোট ব্যবসায়ী এমন জেলায় অনেক রয়েছেন, যাঁরা এই মুহূর্তে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছেন। তবে আশার আলো একটাই, তাঁদের অনেকে সরকারি উদ্যোগে বিনামূল্যে অন্তত রেশনটা পেয়ে চলছেন। কিন্তু রেশন কার্ড না থাকার ফলে বা অন্য কোনও কারণে যারা সমস্যায় পড়েছেন, তাঁদের স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করার আর্জি জানাব। ব্যবসায়ী সংগঠন অবশ্যই তাঁদের পাশে দাঁড়াবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement